পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১০৫

ও নেতৃত্ব সারা ভারতকে এক নবজীবনের আবেগে স্পন্দিত করিতে লাগিল। গান্ধীজী তখন ধর্ম্মগুরু নহেন, বিশাল সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি—অচির-বিজয়লাভের আশ্বাসদাতা, পাঞ্চজন্যধারী জনার্দ্দন। সেই কালে, ভারতের সেই অভিনব জাগরণ-ক্ষণে, একজনের আত্মা যেমন জাগিয়াছিল, তেমন আর কাহারও জাগে নাই। তরুণ সুভাষচন্দ্র ভারতের স্বাধীনতালাভকে অন্তরের সহিত বিশ্বাস করিলেন, সে আর স্বপ্ন নহে— অতিশয় বাস্তব সত্য বলিয়া বিশ্বাস করলেন। তিনি গান্ধীজীর নীতিতে পূর্ণ আস্থাবান না হইলেও, তাঁহার নেতৃত্বে আশ্বস্ত হইলেন এবং বিরাট জন-জাগরণের—তথা জাতির চৈতন্যসম্পাদনের গুরুরূপে তাঁহাকে বরণ করিলেন, গান্ধী-ধর্ম্ম নয়, গান্ধী-নীতিও নয়,—তিনি গান্ধীজীকে অকপটে বিশ্বাস করিলেন। সুভাষচন্দ্র চান স্বাধীনতা; গান্ধীজী সেই স্বাধীনতালাভের জন্য যুদ্ধ করিবেন, কোনরূপ আপোষ বা রফা তিনি করিবেন না। এই আশা ও বিশ্বাসে সুভাষচন্দ্র বিরজা-হোম করিয়া সেই হোমাগ্নিতে সর্ব্বস্বার্থ আহুতি দিয়া গৃহ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া ছিলেন—আজিও তিনি গৃহে ফিরেন নাই

 কিন্তু ক্রমেই তাঁহার সেই বিশ্বাস আঘাতের পর আঘাতে জর্জ্জরিত হইয়া উঠিল। গান্ধী-মন্ত্র যে একটি অব্যভিচারী সত্য মন্ত্র নয়, তাহাতেও সুবিধাবাদ ও কূটকৌশলের স্থান আছে, ইহা ক্রমেই অধিকতর স্পষ্ট হইয়া উঠিতে লাগিল। সুভাষচন্দ্রের ভক্তি লঘুচিত্তের ভক্তি নয়, সুভাষচন্দ্র গান্ধীজীর