পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১২৫

সেই সেবার দ্বারা স্বাধীন হয়,—তাহাকে এই পরাধীন জাতির ‘নেতাজী’ বলিয়া যতই আমরা সম্মান করি না কেন, তাহাতে সে কি চরিতার্থ হইবে? তাহার তো নেতা হইয়া দেশবাসীর উপর প্রভুত্ব করিবার—ইংরেজ-সরকারের নিকটে কিঞ্চিৎ ক্ষমতা লাভ করিয়া, এবং তাহারই দোসর হইয়া,[১] এই দুঃখী মানুষগুলাকে দমন শাসন করিবার প্রবৃত্তি কখন ছিল না। যাহারা দেশকে স্বাধীন করিবার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করিবে—সত্য সতাই সর্বস্বপণ করিয়া মৃত্যুবরণ করিবে, মান গৌরব প্রতিপত্তি কিছুরই আশা বা কামনা করিবে না—সে তাহাদেরই ‘নেতাজী’ অর্থাৎ—‘অগ্রণী’। ইহাই যদি আমরা না বুঝিলাম, তবে তাঁহাকে ঐ নামে ডাকিয়া তাঁহার অসম্মান করি কেন?

 গান্ধী-কংগ্রেস ইতিমধ্যেই সুভাষচন্দ্রের স্মৃতির প্রতিও তাহাদের সেই পুরাতন বৈর-মনোভাব আর ঢাকিয়া রাখিতে পারতেছে না। আজাদ-হিন্দ্-ফৌজ ও নেতাজীর প্রতি ভারতবাসীর সেই উদ্বেল ভক্তিকে কংগ্রেস একটা দুঃসময়ে বড় কাজে লাগাইয়াছিল, এখন সে প্রয়োজন আর নাই। সে এমন আশাও করিয়াছিল যে, ভারতবাসীর সেই সুভাষ-প্রীতি কংগ্রেস-ভক্তিতেই পরিণত হইবে—গান্ধীর পদতলে উপবিষ্ট ভক্তশিষ্যের মূর্ত্তিতেই সুভাষচন্দ্র পূজা পাইবেন; তাহার জন্য দুই একটা বুদ্ধির কাজও সে করিয়াছিল। কিন্তু সেই আশা পূর্ণ হইবে না দেখিয়া গান্ধী-কংগ্রেস পূর্ব্বের মতই সুভাষের


  1. পরিশিষ্টে “গান্ধী ও গান্ধী-কংগ্রেস সম্পর্কে সুভাষচন্দ্র” দ্রস্টব্য।