পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৪৯

সেইরূপ গৌরব দাবী করিতেছি না; অবতার বা মানব-ধর্ম্ম-প্রতিষ্ঠাতা যে সকল মহাপুরুষ পৃথিবীতে চিরপূজ্য হইয়া আছেন, তাঁহাদের মহিমা যেমনই হৌক, তাঁহারা সাধারণ মানবচরিত্র নহেন―একটু উর্দ্ধস্তরের আত্মা। সুভাষচন্দ্রের চরিত্র সাধারণ না হইলেও, তাহার মহত্ত্ব―মানবতায়। ভারতইতিহাসের এক অতিশয় সঙ্কট-লগ্নে তিনি যেন বিধাতাকর্ত্তৃক একটি কঠিন ব্রত উদ্‌যাপন করিতে আদিষ্ট হইয়াছিলেন, আমরাও প্রধানতঃ সেই কর্ম্মের ভিতর দিয়াই তাঁহার পরিচয় পাই। কিন্তু মানুষ-সুভাষচন্দ্র যে সেই নেতাজী-নামধারী সুভাষচন্দ্র হইতে কত বড়, ইহাই যদি আমরা বুঝিতে না পারিলাম, তবে মানবাত্মার একটা বড় প্রকাশকেই আমরা দেখিলাম না। তাই ক্ষণেকের জন্য তাঁহার সেই বাহিরের বেশ, যত কিছু বাহিরের সম্পর্ক―গান্ধী, কংগ্রেস, ব্রিটিশ-গভর্ণমেণ্ট ও আজাদ-হিন্দ্―সব দূরে সরাইয়া, আমরা সুভাষ-নামধারী সেই মহাত্যাগী ও মহাপ্রেমিক, আত্মশক্তিমান্ ও মহাবীর্য্যবান্ পুরুষশ্রেষ্ঠকেই চিনিয়া লইব। চিনিবার উপায়ও আছে।

 মানুষের শ্রেষ্ঠ পরিচয় প্রেমে―এই প্রেম যত বড়, মানুষও তত বড়। সুভাষচন্দ্রের দেশ-প্রেম―তাহার কি তুলনা আছে? তেমন প্রেম পৃথিবীর ইতিহাসে আর কাহারও মধ্যে ঠিক সেই মাত্রায় ও সেই রূপে প্রকাশ পাইয়াছে? এ প্রেম―আত্মার আত্মোৎসর্গের যে আনন্দ, সেই আনন্দ-পিপাসা। স্বামী বিবেকানন্দ ইহাকে জ্ঞানে পাইয়া কর্ম্মে রূপ দিতে চাহিয়া