পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জয়তু নেতাজী
১৫৩

করিতে পারিতেন না―নির্জ্জনে কাঁদিতেন; কিন্তু কিছুতেই সুভাষচন্দ্রকে আত্মরক্ষা বা আত্মকল্যাণচিন্তায় অবহিত করিতে পারিতেন না।

 উপরে যে দুইটি কাহিনীর উল্লেখ করিয়াছি, উহার মধ্যেই সুভাষ-চরিত্রের আদি-রূপ দেখিয়া লইতে হইবে। সুভাষের দেশ-প্রেম একটা বড় সেণ্টিমেণ্ট বা প্রবল হৃদয়াবেগ মাত্র ছিল না, তাহার মূলে ছিল অপার করুণা; করুণা বলিতে দয়া নয়, ইহা সেই অনুকম্পা―যাহাতে দাতাও দানকালে ভিখারীর সমান হয়, সেও যেন যাচনা করে, যেন গ্রহণ করিলে সে কৃতার্থ হয়। এই সুভাষচন্দ্র যুদ্ধ করিয়াছিলেন! এত বড় প্রেম যাহার তাহার সেই যােদ্ধৃবেশের অন্তরালে কোন্ হৃদয় স্পন্দিত হইতেছিল? সাক্ষাৎ আততায়ী তাঁহাকে বধ করিতে আসিয়া ধৃত হইয়াছে―তেমন ব্যক্তিকেও তিনি আলিঙ্গন করিয়া মুক্তি দিয়াছেন। কতবার যে সামরিক আইন অগ্রাহ করিয়া বিশ্বাসঘাতক সেনানীকে ক্ষমা করিয়াছেন, তাহা উল্লেখ করিয়া আজাদ-হিন্দ ফৌজের এক উচ্চ কর্ম্মচারী পরে দুঃখ করিয়াছেন; তাহাতে অনেক ক্ষতি হইয়াছিল। সুভাষচন্দ্র যখন যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন করিতে যাইতেন তখন সেনানিবাসে পৌঁছিয়া তিনি সর্ব্বাগ্রে নিম্নতম সৈনিকের ভােজনশালায় প্রবেশ করিতেন, এবং নিজে তাহাদের খাদ্য আস্বাদন করিয়া দেখিতেন, তাহা খাদ্য কি অখাদ্য। যুদ্ধশেষে রেঙ্গুন হইতে প্রত্যাবর্ত্তন-কালের একটি ঘটনাও উল্লেখযােগ্য; তিনি নিজে