পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৫৫

পক্ষে―‘অদ্বেষ্টা সর্ব্বভূতানাম্’―অর্থাৎ সকল প্রাণীর প্রতি বিদ্বেষহীন হওয়া প্রায় অসম্ভব বলিয়াই মনে হয়। কিন্তু গীতার এই পংক্তিটিই সুভাষচন্দ্রের চরিত্রকে দৃষ্টান্ত করিয়া তুলিয়াছে। গান্ধী-কংগেসের সহিত তাঁহার প্রায় চির-বিরোধ, এবং ত্রিপুরীতে ও তাহার পরে, তাঁহার সহিত সেই দলের ঘােরতর শক্রতাচরণের কথা আমি সবিস্তারে বলিয়াছি, কিন্তু একটি কথা বলি নাই। আমি সেই ঘটনার আদ্যন্ত অতিশয় সাবধানে পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি, কিন্তু মনের অণুবীক্ষণ-সাহায্যেও আমি সে সম্পর্কে সুভাষচন্দ্রের অন্তরে অণুমাত্র বিদ্বেষ আবিষ্কার করিতে পারি নাই। ইহা বিশ্বাসযােগ্য নয় বলিয়াই আমিও পরমাশ্চর্য্য বােধ করিয়াছি। পরে বুঝিয়াছি, এই অবিদ্বেষের কারণ কি। যাহার হৃদয় এত বড় প্রেমে বলীয়ান, যাহার দৃষ্টি এত উর্দ্ধে নিবদ্ধ, যে আত্মশক্তিতে এমন আস্থাবান, সে ঐরূপ শত্রুতায় দুঃখ পায় মাত্র―বিচলিত হইবে কেন? সে তাহাকে একটা বাধামাত্র মনে করে, কিন্তু সকল বাধা লঙ্ঘন করাতেই যাহার পৌরুষ―সে তাহাতে ক্ষুন্ন বা ক্ষুব্ধ হইবে কেন?[১] আমরা এমন প্রেম ও পৌরুষ দেখি নাই বলিয়াই মনে ঐরূপ সংশয় জাগে। এখানে প্রসঙ্গক্রমে একটি কথা বলিয়া রাখি―না। বলিলে একটা ভুল ধারণা বড়ই প্রশ্রয় পাইবে। আজাদ-হিন্দ্ -

  1. দিলীপকুমারও লিখিয়াছেন –“It almost seemed that he not only loved to conquer opposition, but almost courted as it were―probably to enjoy more vividly the joy of courage and price of indomitable initiative” (The Subhas I Knew P. 50)}}