পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৪
জয়তু নেতাজী

ইহা অনেক পরিমাণে সত্য। আমাদেরই সংকীর্ণ অভিজ্ঞতায় আমরা দেশ-বিশেষের নেতাকে ঐরূপ রাজনৈতিক বােধ-শক্তির পরিচয় দিতে দেখিয়াছি; তাঁহারা অতিশয় সঙ্কট-মুহূর্ত্তে যেন ঐরূপ একটা উদ্দীপ্ত চেতনার বশে এমন কাজ করিয়াছেন যাহা সে সময়ে অতিশয় দুঃসাহসিক বলিয়া মনে হইয়াছিল, কিন্তু পরবর্তী ঘটনা-প্রমাণে তাহাই অতিশয় সমীচীন বিবেচিত হইয়াছে। এই যে অপরা-বুদ্ধি, ইহা কিরূপ? একহিসাবে উহা একটি জন্মগত শক্তি। অপর সকল প্রতিভার মত, রাজনৈতিক প্রতিভাতেও একটি সহজাত বোধশক্তি গােড়া হইতে থাকা একান্ত আবশ্যক।

 কিন্তু ঐ জন্মগত সংস্কারকেও শিক্ষা ও সাধনার দ্বারা উজ্জ্বল করিয়া তুলিতে হয়, তাহার জন্য নিরন্তর অনুশীলন চাই। ঐ বেশ শক্তি প্রায়শঃ কার্য্যকরী হইলেও প্রতিবারেই হইবে, এমন নিশ্চয়তা নাই। এখন, কোন নেতার পক্ষে সেই সহজাত রাজনৈতিক বোধশক্তিকে স্বচ্ছ ও সুপ্রবুদ্ধ রাখিবার জন্য কি করা উচিত?

 প্রথমতঃ তাঁহাকে সম্পূর্ণ স্বার্থশূন্য হইতে হইবে; সজ্ঞানেই হোক, আর অজ্ঞানেই হোক, কোনরূপ স্বার্থচিন্তাযুক্ত হইলে ওই দৃষ্টি আর স্বচ্ছ থাকিবে না, তখন তাহা নেতাকে পথের পরিবর্ত্তে বিপথে চালিত করিবে। ঐ বােধশক্তির উপরে যখন অহং বুদ্ধি জয়ী হয় তখন বিনাশেরও আর বিলম্ব নাই। অতএব একটা জাতির ভাগ্য লইয়া খেলা করিবার সময়ে―মানুষের পক্ষে যতটা সম্ভব―স্বার্থশূন্য হইতে হইবে।

 দ্বিতীয়তঃ নেতামাত্রকেই নিজ ব্যক্তি-চেতনাকে গণ-চেতনার সহিত এক করিয়া ফেলিতে হইবে, তাহা না হইলে, গণ-চিত্তের বিরাট সংবেদন নেতার সেই বোধশক্তিকে আশ্রয় করিয়া আত্মপ্রকাশ করিতে পারিবে