পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৪
জয়তু নেতাজী

এই কার্য্যে তিনি আশ্চর্য্যরূপ সাফল্যলাভ করিয়াছিলেন―উহাই তাঁহার কর্ম্মকুশলতা ও সাধন-বুদ্ধির শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। একদিকে তিনি জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিচার-শক্তিকে অবজ্ঞাত করিতে পারিয়াছিলেন, অপর দিকে ঐ অন্ধভক্তিকে সংঘবদ্ধ করিয়া একটা প্রবল শক্তির অধিকারী হইয়াছিলেন। প্রথম দিকে ঐ কংগ্রেসের নানা দল লইয়া তাঁহাকে কিছু বেগ পাইতে হইয়াছিল, পরে ক্রমে ক্রমে পুরাতন নেতাগণের মৃত্যু হওয়ায়, তিনিই একচ্ছত্র আধিপত্য লাভ করিয়াছিলেন; উদীয়মান নবীন বিদ্রোহীদিগকে তিনি অতিশয় ধীরবুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সহিত নিরস্ত করিয়াছিলেন, সুহৃদ্-ভেদ-নীতি ও নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা―এই দুইয়ের সাহায্যে সেই সংকট উত্তীর্ণ হইতে পারিয়াছিলেন, তাহা পূর্ব্বে বলিয়াছি। গান্ধী তাঁহার সেই নবধর্ম্ম-প্রচারের ঐকাস্তিক কামনায় আর কোন মানুষের মহত্ত্ব বা মহাপ্রাণতা-দর্শনে কিছুমাত্র বিচলিত হইতেন না―তাঁহার চক্ষে ঐ এক উদ্দেশ্যসাধনের উপযোগিতা ছাড়া কাহারও কোন মূল্য ছিল না। এইজন্য তিনি যতীন দাসের সেই অপূর্ব্ব আত্মোৎসর্গকে তুচ্ছ করিয়াছিলেন; এইজন্যই সুভাষচন্দ্রের উপরে সীতারামাইয়াকে স্থান দিয়াছিলেন। এইজন্যই তিনি তাঁহার সেই ধর্ম্মস্থাপনের পক্ষে কোন বাধাই মানিতেন না―ভারতব্যাপী হাহাকার, লক্ষ জীবননাশকেও তিনি গ্রাহ্য করেন নাই; এই সকলই সেই এক কারণে―তাঁহার সেই ধর্ম্মপ্রচারের জলন্ত উৎসাহ।

 সেই ধর্ম্মস্থাপনের জন্যই তিনি রাজনীতির ভেক ধারণ করিয়াছিলেন―কংগ্রেসনামক সংঘটিকে ঐ রাজনীতির দোহাই দিয়া, তিনি প্রথমে করায়ত্ত করিয়াছিলেন, পরে তাহাকেই তাঁহার ধর্ম্মচক্রে পরিণত করিয়াছিলেন। ঐ ধর্ম্মে দেশ নাই, জাতি নাই, উহাতে কোন রাজনৈতিক জয়লাভের আবশ্যকতা নাই। তথাপি দেশে সেই