পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৪
জয়তু নেতাজী

 না, সুভাষচন্দ্রের জয়লাভ বা সফল-কীর্ত্তি উহাই নয়,―সে কীর্ত্তি অন্যরূপ। স্বাধীনতা কাহাকে বলে, তাহা কেমন করিয়া লাভ করিতে হয়, এবং তজ্জন্ত কোন একটি বস্তুর প্রয়ােজন, তাহাই হাতে-কলমে করিয়া দেখাইয়া তিনি ভারতবাসীর অজ্ঞতা ও অবিশ্বাস দুর করিয়াছেন। দেশের ভিতরে যাহা করিয়া দেখাইবার উপায় ছিল না, তাহাই একটি ক্ষুদ্র অথচ অখণ্ড আকারে সৃষ্টি করিয়া তিনি চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন করিয়াছেন; ত্রিপুরীতে যাহা প্রমাণ করিতে পারেন নাই, সিঙ্গাপুরে তাহাই গড়িয়া দিয়াছিলেন। এ কীর্ত্তি এক হিসাবে অমানুষিক বটে; কিন্তু মানুষের আত্মা তো দেবতার চেয়ে বড়, সেই আত্মার পক্ষে কিছুই অসাধ্য নয়। চাই কেবল সেই আত্মারই শ্রেষ্ঠ শক্তি, যাহার নাম―প্রেম। তিনি নিজে সেই প্রেমের বিগ্রহস্বরূপ হইয়া, অগণিত মানুষকে আত্মার বলে বলীয়ান্ করিয়াছিলেন। হাজার হাজার নর-নারীর সে কি আত্মদান। মানুষের আত্মাই যেন আকাশ-স্পর্শী হইয়া উঠিয়াছে―“জীবন-মৃত্যু পায়ের ভৃত্য চিত্ত ভাবনাহীন!” মানুষ তাহার সর্ব্বস্ব দান করিয়াও দানের ক্ষুধা মিটাইতে পারিতেছে না! এমন দৃশ্য ভারতের মধ্যে কেহ কোথাও দেখিয়াছিল? কেন দেখিতে পায় নাই? হায় রে! ইহার নাম হইয়াছে হিংসা! মানুষের আত্মাকে এমন অপমান মানুষেই করে! এত বড় আত্মাহুতির নাম পাপ! ইহারই বিপরীত যাহা, তাহার নাম অহিংসা―এবং তাহাই মহাধর্ম্ম! ধর্ম্মাধর্ম্মের কি সূক্ষ্ম বিচার! হাঁ, ঐ হিংসার পথেই সুভাষচন্দ্র ক্ষুদ্রাকারে একটি ‘স্বাধীন ভারত’ গড়িয়াছিলেন―যে ‘ভারত’ ভাবী ভারতের আদর্শ হইবে। সেই ‘ভারত’কে দ্বিখণ্ডিত করিবার প্রয়ােজন হয় নাই—এবং ‘নেশন’