পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২৬৭

পথভ্রষ্ট হইয়া থাকে তবে তাহাদের গুরু-মন্ত্র কেমন ছিল?―তাঁহার নির্দিষ্ট সেই পথ তাঁহার তিরোধানের সঙ্গে সঙ্গেই এমন ফুরাইয়া যায় কেন? পুঁথিগত সত্য ও সাক্ষাৎ গুরুমুখী সত্য এক নয়; পুঁথির সত্য নির্জ্জীব, কিন্তু গুরুর মুখে সেই সত্যই এমন সজীব হইয়া উঠে যে, অন্ততঃ তাঁহার সাক্ষাৎ-শিষ্যগণ সেই সত্যে অনুপ্রাণিত হইবেই। গুরুর জীবদ্দশায় যাহারা তাঁহাকে এত ভক্তি এত মান্য করিয়াছে, গুরুর অন্তর্দ্ধানমাত্রে তাহারাই তাঁহার সেই প্রকাশ্য ও বহুপ্রচারিত মন্ত্রের এমন অন্যথাচরণ করে কেন? শাস্ত্র, ইতিহাস ও মনুষ্য-বুদ্ধির ইহা অগোচর। এ রহস্য এত সহজে পাশ কাটাইবার নয়। আর, ঐ বৈদেশিক শাসন-পাশ হইতে মুক্তির কথা,―সে কেমন মুক্তি, তাহা কি আজিও, অন্ততঃ কিছু-পরিমাণে অনুভূত হইতেছে না? মুক্তি যদি হইয়াই থাকে, তবে তখনই আবার বন্ধনভয় কেন? সে আবার কেমন মুক্তি?―যে-মুক্তিকে লাভ করিয়াই তাহাতে রং-বেরঙের তাপ্পি লাগাইতে হয়; যে-মুক্তি প্রজা-সাধারণকে ভোগ করাইবার পুর্ব্বে, বাহিরে বিপুল আড়ম্বরে ঘোষণা করিতে হয়: জাতির গৃহ-প্রাঙ্গণের পরিবর্ত্তে আন্তর্জ্জাতিক বৈঠকখানায় যাহাকে মহাৰ্ঘ বেশভূষা পরিয়া হাজিরা দিতে হয়;―প্রজার অন্নকষ্ট তুচ্ছ করিয়া কোটি-কোটি টাকা বিলাস-ব্যসনে, নিত্য-নূতন উৎসব-অনুষ্ঠানে অপব্যয় করিতে হয়―নহিলে ঐশ্বর্য্যের ধাঁধা লাগাইয়া জনগণকে ভক্তি-ত্রস্ত করা যায় না; যে-মুক্তিকে হারাইবার ভয়ে, দরিদ্র-শোষণ ও ধনিক-পোষণ-নীতি অবলম্বন করিতে হয়, এবং ব্রিটিশের বাণিজ্যিক স্বার্থকে পূর্ণ-প্রশ্রয় দিতে হয়;―সেই মুক্তিই কি মহাত্মা গান্ধীর সেই নীতির অবশ্যম্ভাবী ও অনিবার্য্য ফল নয়? মহাত্মা বাঁচিয়া থাকিলে, অবশ্যই ঘন-ঘন প্রয়োপবেশন করিতেন; তাহাতে প্রজাগণের