পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২৬৯

জন্য ভগবানের নিকটে ক্ষমা ভিক্ষা করিতে হয়। এই পাপও সেইরূপ। লেখক নীতিহীন, প্রেমহীন জীবন-ধর্ম্মের কথা বলিয়াছেন―নেতাজীর প্রয়াসকেও তাহা হইলে সেইরূপ প্রয়াস বলিতে হইৰে! নীতিহীন, প্রেমহীন জীবনধর্ম্ম আমরাও চাহি না, কিন্তু তাহার সহিত ‘রক্তাক্ত বিপ্লবের’ সম্পর্ক কি, তাহা বুঝিলাম না। মহাত্মার জীবনবাদ ভারতকে ইংরেজের সাম্রাজ্যপাশ হইতে কিরূপ মুক্ত করিয়াছে তাহাও আমরা দেখিয়াছি; সেই নীতিরই অবশ্যম্ভাবী পরিণাম হইয়াছে এই যে, ভারত তাহার আত্মাকেও হারাইতে বসিয়াছে। অবশ্য ইহাই যে মহাত্মার কামনা বা অভিপ্রায় ছিল তাহা বলিতেছি না, কিন্তু তাঁহার সেই রাজনৈতিক অহিংসা-নীতির (উৎকৃষ্ট ধর্ম্মনীতিও বটে) পরিণাম উহা ছাড়া যে আর কিছুই হইতে পারে না, তাহা ঐ মুক্তিলাভের সর্ত্তগুলি অস্বীকার না করিলে, এবং ভাল করিয়া চিন্তা করিলে, না বুঝিবার কারণ থাকিবে না। উহারই অবশ্যম্ভাবী প্রয়োজন-বশে ভারতের শাসনতন্ত্র হইতে ধর্ম্মকে বহিস্কৃত করা হইয়াছে―তাহাও অহিংসা-ধর্ম্মেরই নামে; কারণ, অহিংসা একটা মহামানবীয় ধর্ম্ম, কোন জাতি বা সমাজের ধর্ম্ম নয়। সমাজকেও যুরোপীয় ছাঁচে ঢালিবার জন্য গান্ধীশিষ্যগণ হিন্দু আইন উঠাইয়া দিতেছেন; ইহার কারণ, গান্ধীর সামাজতন্ত্রবাদ তাঁহার অহিংসাবাদের মতই যুক্তি-বিরুদ্ধ ও অবান্তর, তাহাতে আধুনিক পাশ্চাত্য সমাজতন্ত্রবাদও যেমন ছিল না, তেমনই ভারতীয় আদর্শের সেই মূলনীতির যুগোচিত সংস্কার-চিন্তাও ছিল না। তাই তাঁহার শিষ্যগণ বিলাতী আদর্শের অনুকরণ করিয়া ‘অশিক্ষিত’ ও অসভ্য ভারতবাসীর উপরে নিজেদের সেই snobbery-র মহিমা ঘোষণা করিতেছে। নব্য রাষ্ট্ৰতন্ত্রে ঐ যে ধনিকের আধিপত্য,―তাহার মূল গান্ধীজীর ধর্ম্মামুশাসনে