পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৷৷৶৹

যেমন, উৎপাটনেওতেমনই, ভারতের প্রাণ-সংশয় ঘটিবে। এ কথা আজ যাহারা এখনও বুঝে নাই, কাল তাহাদিগকে বুঝিতেই হইবে। আমি দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করার কথাই বলিতেছি, তৎপূর্ব্বে তাহার ধর্ম্মজীবন উন্নত করা, আধ্যাত্মিক ঔষধের দ্বারা আত্মার আধি নিবারণ করা,এবং তাহা হইতেই জাতির ত্রিতাপ-হরণের কথা বলিতেছি না, সাক্ষাৎ মৃত্যু হইতে জাতিকে রক্ষা করার কথাই বলিতেছি। ধর্ম্মের কথা আমি বলিব না, কারণ, সে বিষয়ে―শুধু আমারই নয়―ভারতবাসী হিন্দুমাত্রেরই―গান্ধীর সহিত মতভেদ ঘটিতে পারে। ধর্ম্ম-বিশ্বাস সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত তো বটেই, তা ছাড়া, মহামানব-ধর্ম্ম বা বিশ্বপ্রেম-বাদের মর্ম্ম আমি হিন্দু বলিয়া হিন্দুর মতই বুঝি; দুঃখের বিষয়, আমি হরিজনও নই, আবার মহাত্মা-শিষ্য নেহেরুর মত সর্ব্বসংস্কারমুক্ত ব্যোমবিহারী জ্ঞানী পুরুষও নই,―তাই মহাত্মাকে আমার গুরু করিতে পারি নাই। কিন্তু সেজন্য কাহারও অসন্তুষ্ট ইষ্ট হইবার কারণ নাই―যেহেতু, এখানে যে-ধর্ম্মের আলোচনা করিয়াছি, তাহাতে হিংসা-অহিংসার তর্ক উঠিতে পারে না, কারণ সে-ধর্ম্মের নাম স্বদেশ ও স্বজাতি-প্রেম; তাহার একমাত্র নঃশ্রেয়স―এই জাতি ও দেশের মুক্তিসাধন; মানব জাতির চিন্তা আগে নয়, স্বজাতির চিন্তাই আগে। সেই ধর্ম্মেরই মূর্ত্ত প্রতীকরূপে আমি নেতাজীকে বরণ করিয়াছি। তাহার সহিত আমার ব্যক্তিগত ধর্ম্ম বা আধ্যাত্মিক সাধন-মন্ত্রের কোন সম্বন্ধ নাই; গান্ধীজীকেও যেমন―নেতাজীকেও তেমনই, আমি আমার ধর্ম্মগুরুরূপ বরণ করি নাই। অতএব, মহাত্মাকে যাঁহারা ঈশ্বরের অবতার অথবা ধর্ম্মগুরু বলিয়া ভক্তি করেন তাঁহাদের সহিত আমার কোন বিবাদই থাকিতে পারে না―এই পুস্তকপাঠ-কালে সেই কথাটি স্বরণ রাখিলে আমাকে সকলেই ক্ষমা করিতে পারিবেন।