পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৸৵৹

তিনি কেন ভুলিয়া যান যে, শ্রীঅরবিন্দই ভগবানের একমাত্র বিভূতি নহেন, আরও অনেক বিভূতি বা প্রকাশ তাঁহার আছে; এবং শ্রীঅরবিন্দ বড় কি, সুভাষচন্দ্র বড়, সে প্রশ্ন অতিশয় অপ্রাসঙ্গিক হইলেও, ভারতের এই যুগের যুগ-প্রয়োজনে (বিশ্বমানবের শাশ্বত প্রয়ােজনে নয়) কাহার সাধনা অধিকতর মূল্যবান, ইতিহাস তাহা পরে নির্ণয় করিবে, এখন সে বিষয়ে কিছু বলা অনাবশ্যক ও অসম্ভব। না, আমি শাশ্বত-সত্য বা মানবের শাশ্বত কল্যাণে অবিশ্বাস করি না; কিন্তু ইহাও বিশ্বাস করি যে, ‘supra-mental plane’, বিশ্বমানব ও ব্রহ্মাণ্ড, Divine Life প্রভৃতির গভীর তত্ত্ব উপস্থিত কিছুকাল মুলতুবি রাখিলে কিছুমাত্র ক্ষতি নাই, কারণ, একটা ‘far-off divine event’-এর জন্য বসিয়া থাকিবার সময় আছে, কাল যে অনন্ত। শ্রীঅরবিন্দের সাধনাও তাহাই প্রমাণ করে। কিন্তু ভগবানের আরও একটা কাজ আছে―সেই মহাকালের যুগ-চক্রটাকে কোন একটা মহাসঙ্কটসন্ধি হইতে উদ্ধার করিয়া সচল করিয়া দেওয়া; সেটা ঐরূপ অনন্তকালের নয়―অতিশয় ক্ষুদ্র কালে, একট সুনির্দ্দিষ্ট লগ্নে সম্পন্ন না করিলে, Divine Life-ও নিতান্তই Divine হইয়া পড়ে। সুভাষচন্দ্র যােগী নহেন―যোদ্ধা; বৃন্দাবনবিহারীর লীলাসহচরও নহেন—সেই বৃন্দাবন-বিহারীকেই সারথি করিয়া তিনি কুরুক্ষেত্রে গাণ্ডীব ধারণ করিয়াছেন। তাই সুভাষচন্দ্র যদি ঐরূপ আত্মশ্লাঘা করিয়া থাকেন, তবে কিছুমাত্র ধর্ম্মভ্রষ্ট হন নাই। মহাশক্তির বরপুত্র যে, তাহাকেই ঐরূপ মহা-নির্ভরের উক্তি সাজে, সে কেন বলিবে না―“আমি সেই মহিষমর্দ্দিনী, দানবদলনী মহাশক্তির পুত্র, আমাকে মারিবে এমন দৈত্য, দানব, অসুর কোথায় আছে?” শক্তিসাধনায় যে, সিদ্ধ হইয়াছে সে-ই এমন কথা বলিতে পারে, নতুবা চতুর্দ্দিকে