পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নব পুরুষ-সূক্ত

যেন সেই চেতনায় চমকিয়া উঠে; তখন তিনি এক অভূতপূর্ব্ব ঘটনাকে কল্পনায় প্রত্যক্ষ করেন, এবং কালান্তরে ও দেশান্তরে সেই ঘটনা ঘটিতেও দেখা যায়। নটরাজরূপী মহাকাল নৃত্যের মধ্যেই যেখানে পা তুলিয়া যতি-তাল রক্ষা করেন, এ যেন সেই মুহূর্ত্তেরই একটি ঘটনা; কবিও দিব্য আবেশের পরমক্ষণে মহাকালের সেই চকিত চরণপাত নিজ হৃদয়ে অনুভব করেন, সেই মুহুর্ত্তে তিনি ঋষি হইয়া উঠেন; ভুত-ভবিষ্যৎ-বর্ত্তমান যেখানে এক হইয়া আছে সেইখানে তাঁহার চিৎ-পদ্ম উন্মীলিত হয়, কণ্ঠে দিব্যবাণীর অধিষ্ঠান হয়। ঐ যে ঘটনা উহা নিত্য ঘটে না বটে, তথাপি উহা নিত্যকালের; এইজন্যই উহার ভূত-ভবিষ্যৎ-বর্ত্তমান নাই; যখন উহা সত্যই কোনকালে ঘটে, তখনই আমরা বুঝিতে পারি―এ ঘটনা কালাতিগ, ইহার ইতিহাস স্বতন্ত্র। এইরূপ ঘটনার যে ইতিহাস, আমাদের দেশে তাহাকে ‘পুরাণ’ বলে; তাহাতে কালের পৃথক পদচিহ্নের হিসাব থাকে না―বৃহত্তর গতিচ্ছন্দই ধরা পড়ে। এই অর্থে মহাভারতও ইতিহাস; কিন্তু তাহা সন-তারিখের ইতিহাস নয়, কালের শাশ্বত তরঙ্গধারার ইতিহাস। ইহাকে বাস্তব বা কল্পনা―কোন নামই দেওয়া যায় না। কবিচিত্তে দেশ ও কাল যখন এক হইয়া যায়, যখন এক দিব্য-আবেশের ক্ষণে তাঁহার চক্ষে মানবেতিহাসের বহিরাবরণ খুলিয়া যায়, তখন তিনি এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন―যাহা নিত্যকার ঘটনারাশির যেন একটা পুঞ্জীভূত রূপ, এক একটা মন্বন্তর বা যুগান্তরের প্রতীক। তখন