পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৮
জয়তু নেতাজী

শ্রীরামকৃষ্ণ যে ভবিষ্যৎ-বাণী করিয়াছিলেন―“তাহার নিজের জ্বলন্ত আত্ম-বিশ্বাসই আর সকলের অবসন্ন চিত্তে নষ্ট-বিশ্বাস ও সাহস ফিরাইয়া আনিবে”―ইহাও যেন নেতাজীর সম্বন্ধে আরও সত্য হইয়াছে।

 তথাপি দুই চরিত্র কি এক? দুইয়ের মধ্যে কি কোন প্রভেদ নাই? প্রভেদ কিছু না থাকিয়া পারে না, কারণ ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব-ভেদ যে থাকিবেই। একেবারে ব্রহ্মভূত না হইলে দুই আত্মা সম্পূর্ণ এক হয় না। আমি বলিয়াছি, উভয়ের ধাতু এক, আকার বা গঠনও এক; তবু একই মেডালের দুই পার্শ্বের মত দুইয়ের মুখ কিছু পৃথক, কিন্তু মেডেল একই। আমি বলিতে পারিতাম―একই বীজের ফুল, জলমাটিও এক, কিন্তু এমনই যে, ঋতুভেদে তাহার রঙের পরিবর্ত্তন হইয়াছে। যাঁহারা আরও ভিতরে দৃষ্টি করিবেন, তাঁহারা কোন ভেদই মানিবেন না। কিন্তু ভেদ একটু মানিলে বুঝিবার সুবিধা হয়। স্বামীজীর দৃষ্টি যেখানে নিবদ্ধ ছিল নেতাজীকে তাঁহার দৃষ্টি তথা হইতে একটু নিম্নে নিবদ্ধ করিতে হইয়াছে, তার কারণ, নেতাজীর লক্ষ্য আরও নিকট। স্বামীজী ছিলেন আদৌ বৈদান্তিক সন্ন্যাসী―পরে দেশপ্রেমিক, দেশ-হিতব্রতী; নেতাজী আদৌ দেশ-প্রেমিক, পরে দেশের সেবার জন্যই সন্ন্যাসী। স্বামীজীর প্রতিভা প্রেমের দ্বারা রঞ্জিত হইলেও, জ্ঞানই তাহার প্রধান লক্ষণ; নেতাজীর প্রতিভায় বিশুদ্ধ জ্ঞানের প্রাধান্য নাই―তাহার শক্তি প্রেমের শক্তি; জ্ঞান―সেই শক্তির অনুমাত্রিক।