পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
স্বামীজী ও নেতাজী
৪৩

তাহার সম্বন্ধে অন্যত্র বলিব; কিন্তু বর্ত্তমান প্রসঙ্গে উহার একটি বড়ই অর্থপূর্ণ। লেখক বলিতেছেন, আজাদ-হিন্দ-গভর্ণমেণ্টের সর্ব্বময় কর্ত্তৃত্ব-ভার গ্রহণ করার উপলক্ষ্যে, বিপুল জন-মণ্ডলীর সম্মুখে দণ্ডায়মান হইয়া নেতাজী যখন মাতৃভূমির উদ্ধার সাধনের সংকল্প বা শপথ-বাণী পাঠ করিতেছিলেন, তখন সেই পাঠের মধ্যে যেস্থানে ত্রিশকোটী ভারতবাসীর শৃঙ্খল-মােচন ও অবর্ণনীয় দুর্দ্দশা ও দারিদ্র্য নিবারণের কথা ছিল, সেইখানে আসিয়া তাঁহার কণ্ঠ সহসা রুদ্ধ হইয়া গেল এবং সারাদেহ পাথরের মত কঠিন ও নিস্পন্দ হইয়া উঠিল―একেবারে বাহ্যজ্ঞানহীন অবস্থা! প্রায় অর্দ্ধঘণ্টাকাল তিনি এই অবস্থায় দাঁড়াইয়া রহিলেন! এই যে অলৌকিক অবস্থা―ইহার মূলে ছিল কোন্ অনুভূতি? স্বামীজীর সেই অনুভূতির তীব্রতম রূপ ইহাই। আরও প্রমাণ আছে। আমেরিকা হইতে প্রত্যাগমনের পর স্বামীজী মাদ্রাজের বক্তৃতায় দেশবাসীকে সম্বােধন করিয়া যাহা বলিয়াছিলেন তাহাতে এই কথাগুলি ছিল―


 “তোমাদের প্রাণে কি একবারও ইহা জাগে যে, এই দেশের কোটি কোটি নর-নারী কতকাল ধরিয়া, ঘৃণিত পশুর মত চরম দারিদ্র্য ও চরম দুর্দ্দশা ভােগ করিতেছে? সে চিন্তা কি তােমাদিগকে অস্থির করিয়া তােলে―আহার-নিদ্রা ত্যাগ করায়? দেশের এই দুর্গতি-মােচনের জন্য তােমরা কেহ কি নাম-ধাম, ধন-জন, পুত্র-পরিবার, এমন কি, নিজের দেহের প্রতিও মমতা ত্যাগ করিতে পার?•••এই জীবন্মৃত অভাগাদিগকে উদ্ধার করিবার কোন উপায়, কোন পন্থা কি তােমরা স্থির করিয়াছ?