পাতা:জল খাবার - কিরণলেখা রায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গ্রন্থ সম্পর্কে

দিঘাপতিয়াকুমার শরৎকুমার রায়ের সহধর্মিণী কিরণলেখা রায়ের সংকলিত এবং সংগৃহীত ‘জলখাবার’ পুনর্মুদ্রণ হলাে। ‘জলখাবার’ আত্মপ্রকাশ করেছিল ১৩৩১ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে। ১৩২৫ বঙ্গাব্দে কিরণলেখার মৃত্যুর পর গ্রন্থটি কলকাতার ভারত মিহির যন্ত্রে অকিনাশচন্দ্র চক্রবর্তী দ্বারা প্রকাশিত এবং সর্বেশ্বর ভট্টাচার্য দ্বারা মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হয়।

 কুমার শরৎকুমার রায় এবং তাঁর সহধর্মিণী কিরণলেখা রায়ের পরিচয় কল্লোল থেকে প্রকাশিত আমার সম্পাদিত কিরণলেখা রায়ের ‘বরেন্দ্র রন্ধন’ গ্রন্থের ভূমিকায় দিয়েছি। এখানে তার পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়ােজন। শুধু এটুকু বলা যেতে পারে, বঙ্গদেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি কুমার শরৎকুমার রায়ের গভীর অনুরাগ এবং ভালবাসা ছিল। স্ত্রী কিরণলেখা রায় তাঁর স্বামীর আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত হয়েই ‘জলখাবার’ সংকলন করেছিলেন।

 ‘জলখাবার’বরেন্দ্র রন্ধনের পরিশিষ্ট গ্রন্থরূপেই আত্মপ্রকাশ করেছিল। ওই গ্রন্থে বেশ কিছু রান্না এবং তাদের পাক-প্রণালী বরেন্দ্রভূমিকে কেন্দ্র করেই পরিবেশিত। তবে ‘জলখাবার’-গ্রন্থে শুধুমাত্র বরেন্দ্র অঞ্চলের খাবার এবং তাদের প্রকরণ পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট করা যায়নি। এ প্রসঙ্গে ভূমিকা অংশে দিঘাপতিয়া কুমার শরৎকুমার রায় লিখেছেন: ‘খাবারের মধ্যে কোনগুলি বরেন্দ্রের নিজস্ব তা নির্ণয় করিতে পারি নাই। আমার স্ত্রীর যত প্রকার খাবার প্রস্তুত প্রণালী জানা ছিল যতটা সম্ভব তৎসমস্তই ইহাতে সন্নিবেশিত করিয়াছি।’

 কিরণলেখার ‘জলখাবার’-এ বাঙালির খাদ্য অভ্যাসের দু'বেলা জলখাবারের আয়ােজন অনেকটাই আছে। বাঞ্জলির ঐতিহ্যবাহী জলখাবার খই, মুড়কি, মুড়িচানাচুর বা মুড়ি বাদাম কিংবা মুখরােচক চালভাজা, চিড়েভাজা আজও চলে আসছে। মুড়ি আজও অপরিহার্য জলখাবার। এছাড়া বিভিন্ন প্রকারের পুরি বা কচুরি, শিঙাড়া, নিমকি, লুচি, পরােটা কালে কালে বাঙালির জলখাবারে গুরুত্ব পেয়েছে। এ সবই কিরণলেখা নির্মাণ পদ্ধতিসহ তাঁর ‘জলখাবার’-এ সংযােজন করেছেন। তার জলখাবারের বৈশিষ্ট্য প্রত্যেকটি অধ্যায়ের সূচনাতে কিরণলেখা প্রত্যেকটি অধ্যায়ের বিশেষত্বকে দেখিয়েছেন। পূরিকা’ অধ্যায়কে ‘পূরিকা’ নাম দেওয়া কেন, ডালের পুর ব্যতীত অন্যান্য জিনিসের পুর মিশিয়ে কীভাবে, কত রকমের পূরিকা বা কচুরি হয়, কোন্ কোন্ অঞ্চলের লােকেরা জলখাবার হিসেবে গ্রহণ করে তার পরিচয়ও শ্রীমতী কিরণলেখা দিয়েছেন। ‘রাধাবল্লভী পুরী’-র নামকরণের বৈশিষ্ট্য জানাতে গিয়ে