পাতা:জাতক (প্রথম খণ্ড) - ঈশানচন্দ্র ঘোষ.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9/o LtSusa ata | 1 || . উপক্ৰমণিকা সহিত ইহার অব্যবহিত পূৰ্ববৰ্ত্তী কয়েকটী জাতকের কিছুমাত্র সম্বন্ধ নাই। পাঠকদিগের অবগতির জন্য বর্গগুলি সুচীপত্রে পৃথগ ভাবে প্ৰদৰ্শিত হইল । একই জাতিক সর্বত্ৰ এক নামে অভিহিত নহে । জাতকার্থিবৰ্ণনায় দেখা যায় গ্ৰন্থকার প্রথম খণ্ডের তৈলপাত্রজাতককে স্থানান্তরে তক্ষশিলাজাতক বলিয়া নির্দেশ • করিয়াছেন । সেইরূপ যাহা প্ৰথম খণ্ডে বানরেন্দ্ৰজাতিক, তাহা দ্বিতীয় খণ্ডে কুম্ভীরজাতক আখ্যা পাইয়াছ। জাতকার্থিবৰ্ণনার কচ্ছপজাতিক ধৰ্ম্মপদে বহুভাণিজাতক বলিয়া অভিহিত। বেরুটি স্তৰূপেও @की क्रिडा दिफुांगজাতক ও কুকুটজাতক উভয় নামেই নির্দিষ্ট হইয়াছে। এরূপ নামভেদের কারণ সহজেই বুঝা যায়। কোন কথার নামকরণ-সময়ে কেহ উহার উপদেশটার দিকে লক্ষ্য করেন এবং “সাধুতার পুরস্কার’ এইরূপ কোন নাম দেন, কেহ বা কথাটীর পাত্ৰদিগের দিকে লক্ষ্য করেন এবং উহাকে “কাঠুরিয়া ও জলদেবতা” এই নামে অভিহিত করেন। অন্য এক জন হয়ত উহাকে “অসাধু কাঠুরিয়াও” বলিতে পারেন । বিরোচনাজাতকটা নামকারকের ইচ্ছামত “সিংহজাতক’ বা “শৃগালজাতক’ বা “দুরাকাজক্ষার পরিণাম’ আখ্যাও পাইতে পারে। জাতকার্থিবৰ্ণনায় দেখা যায় কোন কোন জাতিক শুদ্ধ গাথার আদি শব্দ দ্বারা অভিহিত । উদাহরণ স্বরূপ প্ৰথম খণ্ডের “সত্যাংকির” জাতিক প্ৰদৰ্শন করা যাইতে পারে । পূর্বে বলা হইয়াছে গাথাগুলিই জাতকের বীজ বা প্ৰাণস্বরূপ । ইহাদের ভাষা অতি প্ৰাচীন,-এত প্ৰাচীন যে অংশবিশেষে দুর্বোধ্য বলিলেও অত্যুক্তি হয় না । ইহাতে অনুমান হয় যে প্ৰাচীন সময়ে, আখ্যানগুলি লিপিবদ্ধ হইবার পূর্বে, তাহাদের সারাংশ সচরাচর গাথাকারেই লোকের মুখে মুখে চলিয়া আসিতেছিল, গাথা শুনিয়া লোকে হয় সমস্ত আখ্যানটী, নয় তাহার উপদেশ বুঝিয়া লইত। এখনও দেখা যায়, “যে ধ্রুবাণি পরিত্যজ্য অধ্রুবাণি নিষেবতে, ধ্রুবাণি তস্য নশ্যন্তি অধ্ৰুবং নষ্টমোবহি,” “এক বুদ্ধিরতং ভদ্রে ক্রীড়ামি বিমলে জলো” প্ৰভৃতি শ্লোকের বা শ্লোকাংশের, এবং “পুনমুষিকো ভব,” “বিড়ালতপস্বী,” “বকোহহং পরমধাৰ্ম্মিকঃ,” “অদ্য ভক্ষ্যো ধনু গুণঃ” ইত্যাদি বাক্যের বা বাক্যাংশের সাহায্যে কত প্ৰাচীন কথা সাহিত্যে ও কথাবাৰ্ত্তায় প্রচ্ছন্নভাবে প্ৰচলিত রহিয়াছে । কোন কোন জাতকের গাথায় এবং তৎসংলগ্ন গদ্যাংশে ভাষার ও ভাবের কোন প্ৰভেদ নাই ; গদ্যাংশ যেন গাথারই পুনরুক্তি মাত্ৰ । ইহাতেও বোধ হয় গাথার প্রণয়ন আখ্যায়িকাগুলি লিপিবদ্ধ হইবার পূর্ববৰ্ত্তী। আখ্যায়িকাকার গাথাগুলি সন্নিবেশিত করিবার সময় অনবধানতাবশতঃ পুনরুক্তি-দোষ পরিহার করিতে পারেন নাই । অনেকে জিজ্ঞাসা করিতে পারেন, জাতকার্থিবৰ্ণনা যখন সৈংহল অনুবাদের অনুবাদ, তখন প্ৰাচীন পালি গাথাগুলি অবিকৃত রহিল কিরূপে ? ইহার কারণ বোধ হয় এই যে ভিক্ষুসমাজে পালি গাথাগুলি পুরুষপরম্পরায় মুখে মুখে চলিয়া আসিতেছিল। অপিচ, সমস্ত গাথাই যে জাতকের নিজস্ব তাহাও নহে; ধৰ্ম্মপদ প্ৰভৃতি অন্যান্য শাস্ত্রগ্রন্থেও ইহাদের অনেক গুলি দেখিতে পাওয়া যায় । যে সকল গাথা জাতকের নিজস্ব, সে গুলিতে প্ৰায়শঃ আখ্যানটীর ধ্বনি