পাতা:জাতক (প্রথম খণ্ড) - ঈশানচন্দ্র ঘোষ.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জেতবনের ভিক্ষু ঐ চীবর কিয়াৎকাল ব্যবহার করিবার পর এক দিন গরম জলে ধুইতে গেল এবং উহা জীর্ণবস্ত্ৰ নিৰ্ম্মিত বুঝিতে পারিয়া অপ্রতিভা ও লজ্জিত হইল। গ্রামবাসী চীবর-বৰ্দ্ধক নগরবাসী চীবরাবৰ্দ্ধককে প্ৰতারিত করিয়াছে এই সংবাদ অচিরে সজঘমধ্যেও রাষ্ট্র হইয়া পড়িল । একদিন ভিক্ষুরা ধৰ্ম্মসভায় এই কথার আলোচনা করিতেছেন, এমন সময় শাস্তা সেখানে উপস্থিত হইলেন এবং সমস্ত বৃত্তান্ত শুনিয়া বলিলেন, “জেতবনবাসী ভিক্ষু পুৰ্ব্বজন্মেও এইরূপ প্রতারণা করিত, এবং এবার যেমন নিজে প্ৰতারিত হইয়াছে, পুৰ্ব্বজন্মেও সেইরূপ প্ৰতারিত হইয়াছিল।” অনন্তর তিনি সেই অতীত কথা अब्रिल कब्रिगन । ] পুরাকালে বোধিসত্ত্ব কোন বনমধ্যবৰ্ত্তী পদ্মসরোবরের নিকটস্থ বৃক্ষে বৃক্ষদেবতা হইয়া বাস করিয়াছিলেন। তখন একটি অনতি-বৃহৎ পুষ্করিণীতে প্ৰতিবৎসর গ্রীষ্মকালে জল বড় কমিয়া যাইত। এই পুষ্করিণীতে মৎস্য থাকিত। এক দিন এক বক মৎস্যদিগকে দেখিয়া মনে করিল, “ইহাদিগকে কোন রূপে প্ৰতারিত করিয়া খাইবার উপায় করিতে হইবে।” । অনন্তর সে যেন নিতান্ত চিন্তাবিষ্ট হইয়াছে এই ভাবে জলের ধারে বসিয়া রহিল। মৎস্যেরা বককে দেখিতে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আৰ্য্য, আপনি এত চিন্তিত হইয়া বসিয়া আছেন কেন ?” বাক কহিল, “আমি তোমাদের কথাই চিন্তা করিতেছি।” “আমাদের জন্য কিসের চিন্তা, আৰ্য্য ?” “এই পুষ্করিণীর জল কমিয়া নীচে নামিয়াছে, খাদ্য দ্রব্যের অভাব ঘটিয়াছে, ভয়ানক গরমও পড়িয়াছে ; তাই বসিয়া ভাবিতেছি, মাছ বেচারীরা এখন কি করিবো।” “বলুন ত আৰ্য্য, এখন তবে আমাদের কৰ্ত্তব্য কি ?” “তোমরা যদি আমায় বিশ্বাস কর, তাহা হইলে এক কাজ করা যাইতে পারে। কিছু দূরে একটি সরোবর আছে, তাহাতে পঞ্চ বর্ণের পদ্ম জন্মে। আমি তোমাদিগের এক একটিকে চঞ্চু দ্বারা ধরিয়া তাহার জলে ছাড়িয়া দিতে পারি।” “আৰ্য্য, পৃথিবীর প্রথম কল্প হইতে এ পৰ্য্যন্ত কখনও কোন বক মৎস্যদিগের ভাবনা ভাবে নাই। বলুন দেখি, আপনি আমাদিগকে এক একটা করিয়া উদারস্থ করিবার ইচ্ছা করিয়াছেন কি না ?” “না, না ; তোমরা যদি আমায় বিশ্বাস কর, তবে তোমাদিগকে কখনও খাইব না । আমি যে সরোবরের কথা বলিলাম, তাহা আদৌ আছে কি না। যদি তোমাদের এরূপ সন্দেহ হয়, তাহা হইলে বরং তোমাদের একটি মৎস্যকে আমার সঙ্গে দাও ; সে স্বচক্ষে দেখিয়া আসুক।” মৎস্যেরা বকের কথামত এক প্ৰকাণ্ড কাণা মাছকে আনিয়া বলিল “ইহাকে লইয়া যান ।” তাহারা ভাবিল, “বক জলে স্থলে কোথাও এই কাণা মাছকে অ্যাটিয়া উঠিতে পরিবে না।” বিক কাণা মাছকে লইয়া সেই বৃহৎ সরোবরের জলে ছাড়িয়া দিল এবং তাহাকে উহার বিশাল আয়তন দেখাইয়া পুনর্বার মৎস্যদিগের নিকট আনয়ন করিল। কাণা মাছ জ্ঞাতিবন্ধুদিগকে নূতন সরোবরের শোভা সম্পত্তির কথা জানাইল । তাহা শুনিয়া সমস্ত মৎস্যই সেখানে যাইবার জন্য ব্যগ্ৰ হইল এবং বককে বলিল, “আৰ্য্য, আপনি অতি সুন্দর উপায় স্থির করিয়াছেন। আমাদিগকে সেই বৃহৎ সরোবরে লইয়া চলুন।” তখন বিক প্ৰথমেই সেই কাণ মাছকে লইয়া যাত্ৰা করিল এবং তাহাকে সরোবরের তীরে লইয়া প্ৰথমে জল দেখাইল, পরে তীরদেশস্থ এক বরুণ বৃক্ষের উপর অবতরণ করিয়া তাহাকে শাখাস্তরে নিক্ষেপ পূর্বক চঞ্চুর আঘাতে মারিয়া ফেলিল এবং মাংস খাইয়া কাঁটাগুলি বৃক্ষমূলে ফেলিয়া দিল। তাহার পর সে পুনর্বার সেই পুষ্করিণীতে গিয়া বলিল, “তাহাকে জলে ছাড়িয়া দিয়া আসিলাম ; এখন তোমরা আর কে যাবে চল।” এইরূপে বিক এক একটা করিয়া মৎস্য লইয়া যাইতে লাগিল, পুষ্করিণী ক্ৰমে মৎস্তাশূন্য হইল। শেষে থাকার মধ্যে সেখানে কেবল একটা কৰ্কট রহিল। বিক তাহাকেও খাইতে ইচ্ছা করিয়া বলিল, “ওহে কৰ্কট, আমি সমস্ত মৎস্য লইয়া পদ্মসম্পন্ন সরোবরে, রাখিয়া আসিলাম। চল, এবার তোমাকেও সেখানে س۔ حصہ م~ہ