পাতা:জাতক (প্রথম খণ্ড) - ঈশানচন্দ্র ঘোষ.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতকসমূহের উৎপত্তির কালবিচার। Rese দেখা যায় জাতৃকসমূহের সঙ্কলনকাৰ্য৷ খ্ৰীষ্টর,অন্ততঃ ৩ বৎসর পূৰ্ব্বে নিম্পন্ন হইয়াছিল। ইহার সঙ্গে তুলনা করিলে বৃহৎকথা, পঞ্চতী, কথাসরিৎ’ সে দিনের গ্ৰন্থ মাত্র। অপিচ, অনেকগুলি জাতকের উপাখ্যানভাগ গৌতম বুদ্ধ স্বয়ং কিংবা র্তাহার শাখা BDS DDD DDDBS BB BDBDBD DBDB DBSS BDBDBBDS BDBS ন্যগ্রোধমূগজাতক, খদিরাঙ্গারজাতক, লোশকজাতক, নক্ষত্ৰজাতিক, মহাশীল- গুলির উৎপত্তির বজাতক, শীলবষ্কাগজাতক, তৈলপাত্রজাতক প্রভৃতি আখ্যায়িকায় বৌদ্ধভােব "বিটী । এতই পরিস্ফুটিত যে তাহাদিগকে বৌদ্ধেতির ব্যক্তিকর্তৃক রচিত মনে করা যায় না। তবে জাতকার্থিবৰ্ণনার অধিকাংশ কথার কোন কোনটী বৌদ্ধ সময়ে, কোন কোনটী গৌতমের পূর্ববৰ্ত্তীকালে রচিত ইহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। ইহাদের কোন কোন কথা মহাভারতে দেখা যায়; দশরথ জাতকটী ত একখানি ছোটখাট রামায়ণ । কিন্তু এসম্বন্ধে কে কাহার পূর্ববৰ্ত্তা, কে উত্তমণি, কে অধমৰ্ণ, ইহা বিচার করিতে গেলে সাহিত্যসেবীদিগের মধ্যে তুমুল বিবাদের সম্ভাৱনা । অনেকে বলিবেন, মহাভারত প্ৰভৃতি অতি প্ৰাচীন গ্ৰন্থ এবং গৌতমবুদ্ধের পূর্ববৰ্ত্তী; অতএব বুঝিতে হইবে যে বৌন্ধেরাই এই সকল গ্ৰন্থ হইতে কথা অপহরণ করিয়া তাহাদিগকে নূতন বেশে সাজাইয়াছেন এবং নিজস্ব বলিয়া চালাইয়াছেন । কিন্তু প্ৰতিবাদীরা উত্তর দিবেন, “কে বলিল রামায়ণ ও মহাভারত গৌতমের পূৰ্বেই তাহাদের বর্তমান আকার প্রাপ্ত হইয়াছিল ? মহাভারতে যে কত সময়ে কত আখ্যায়িকা প্ৰক্ষিপ্ত হইয়াছে তাহা কে অস্বীকার করিতে পারে ? অতএব ইহাই বা বলিব না কেন যে তদন্তৰ্গত জাতকসাদৃপ্তযুক্ত আখ্যায়িকাগুলিও প্রক্ষিপ্ত ? যে সকল আখ্যায়িকা হিন্দু ও বৌদ্ধশাস্ত্রের সাধারণ সম্পত্তি, সেগুলি সুন্মরূপে বিচার করিলেও বৌদ্ধ-আখ্যায়িকাগুলির পূর্ববৰ্ত্তিতা প্ৰতিভাত হয়। সে সমস্ত বৌদ্ধের হস্তে অমাৰ্জিত, অসংস্কৃত ও কাব্যোৎকৰ্ষবিজিত ; পক্ষান্তরে রামায়ণ-মহাভারতেই বল, বা পঞ্চতন্ত্র-হিতোপদেশেই বল, বর্ণনাচাতুৰ্য্যে, ভাবমাধুৰ্য্যে ও চরিত্রবিশ্লেষণে উৎকৃষ্টতর। ইহা হইতে বুঝিতে হইবে না কি যে জাতকসংগ্ৰহকালে বা তাহারও পূর্বে এই সকল আখ্যানের অন্ধুরোদগম হইয়াছিল ; শেষে বাল্মীকি ব্যাসাদির প্রতিভাবলে মনোহর পুষ্পপল্লবের বিকাশ হইয়াছে ? মানবসমাজে সর্বত্রই যখন ক্রমোন্নতি দেখা যায়, তখন সাহিত্যেই বা তাহার ব্যতিক্রম হইবে কেন ? যেমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তৃণগুল্ম জন্মিয়া ও পচিয়া ভূমির সসারতা সম্পাদন করিলে তাহাতে শেষে শালতালাদি মহাবৃক্ষের উদ্ভব হয়, সেইরূপ ক্ষুদ্র কবি, ক্ষুদ্র কথাকার প্রভৃতির উৎপত্তি ও বিলয়ের পরে তাহাদের সঞ্চয়সমবায়ের প্রভাবে মহাকবিদিগের আবির্ভাব ও পুষ্টিসাধন ঘটে । কেবল ভারতবর্ষে কেন, ইংল্যাণ্ড প্ৰভৃতি প্ৰতীচ্য দেশের সাহিত্যেও প্ৰাচীন কথার এইরূপ সংস্করণ ও পরিমার্জন দেখিতে পাওয়া যায়। যে নিয়মে রামপণ্ডিতের ও কাষ্ঠহারিণীর কথা রামায়ণে ও শকুন্তলাবৃত্তান্তে উৎকর্ষ লাভ করিয়াছে, সেই নিয়মেই লিয়ারের ও ম্যাকবেথের কথা সেকসপিয়ার প্রণীত তত্তন্নামধেয় নাটকে কাব্যোৎকর্ষের পরাকাষ্ঠ প্ৰাপ্ত হইয়াছে। অপিচ, বৌদ্ধজাতকগুলির রচনাকালে রামায়ণ ও মহাভারত যদি বর্তমান সময়ের ন্যায় জনসমাজে সুবিদিত থাকিত, তাহা হইলে বৌদ্ধ উপাখ্যানকারেরা বোধ হয় মূল ঘটনার কোন বিকৃতি ঘটাইতে সাহসী হইতেন না । সৰ্ব্বজনগ্রাহ্য কোন আখ্যানের অপকর্ষ ঘটাইলে