পাতা:জাতক (প্রথম খণ্ড) - ঈশানচন্দ্র ঘোষ.pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8おー(qマー**マー | S ዓ S বোধিসত্ত্ব বলিলেন, “মহারাজ, আমি হিমালয়ে থাকি।” “এখন কোথায় যাইবেন ?” “আমি এখন বর্ষাবাসের উপযুক্ত স্থান অনুসন্ধান করিতেছি ” “তবে অনুগ্রহপূর্বক আমার উদ্যানেই অবস্থিতি করুন।” বোধিসত্ত্ব এই প্ৰস্তাবে সম্মত হইলে, রাজা নিজেও আহার করিলেন এবং তঁহাকে লইয়া উদ্যানে গেলেন । অনন্তর তিনি বোধিসত্ত্বের জন্য পৰ্ণশালা নিৰ্ম্মাণ করাইয়া দিলেন এবং তাহার এক অংশ দিবাভাগের ও এক অংশ রাত্রিকালের বাসোপযোগী করাইলেন। প্ৰব্ৰাজকদিগের যে অষ্টবিধ পরিষ্কার * আবশ্যক, রাজা সে গুলিরও ব্যবস্থা করিলেন এবং উদ্যানপালকের উপর বোধিসত্ত্বের তত্ত্বাবধানের ভার দিয়া প্রাসাদে ফিরিয়া গেলেন । বোধিসত্ত্ব তদবধি রাজোদ্যানে বাস করিতে লাগিলেন । রাজা প্ৰতিদিন দুই তিনবার তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাইতেন । এই রাজার অতীব দুষ্টস্বভাব, ক্ৰোধন, উগ্র ও নিষ্ঠুর এক পুত্র ছিল ; রাজা নিজে এবং র্তাহার জ্ঞাতিবন্ধুগণ কেহই উহাকে দমন করিতে পারিতেন না। অমাত্যবৰ্গ, ব্ৰাহ্মণ ও গৃহপতিগণ সমবেত হইয়া রাজকুমারকে ক্রোধাভরে বলিয়াছিলেন, “আপনি এরূপ কুব্যবহার করিবেন না, এরূপ আচরণ নিতান্ত গৰ্হিত ।” কিন্তু ইহাতেও কোন ফলোদয় হয় নাই । বোধিসত্ত্বকে পাইয়া রাজা ভাবিলেন, ‘এই শীলাসম্পন্ন পরমপূজ্য তপস্বী ভিন্ন অন্য কেহই আমার পুত্রের মতিপরিবর্তন করিতে পরিবে না , অতএব ইহঁরই উপর পুত্রের উদ্ধারের ভার দিই৷ ” এই সঙ্কল্প করিয়া তুিনি একদিন কুমারকে সঙ্গে লইয়া বোধিসত্ত্বের নিকটে গেলেন, এবং বলিলেন, “মহাশয়, আমার এই পুত্ৰটী অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও উগ্ৰস্বভাব। আমি কিছুতেই ইহাকে দমন করিতে পারিলাম না । • আপনি ইহার শিক্ষাবিধানের কোন উপায় করুন।” এই প্রার্থনা করিয়া তিনি কুমারকে বোধিসত্ত্বের হস্তে সমর্পণপূর্বক চলিয়া গেলেন। তখন বোধিসত্ত্ব তাহাকে সঙ্গে লইয়া উদ্যানে বিচরণ করিতে লাগিলেন এবং দেখিতে পাইলেন, এক স্থানে একটা নিমের চারা বাহির হইয়াছে; তাহার দুই পার্শ্বে দুইটী মাত্র পাতা দেখা footcts ! বোধিসত্ত্ব বলিলেন, ‘কুমার, এই চারার একটা পাতা খাইয়া দেখা ত ইহার আস্বাদ কিরূপ।” কুমার উহা মুখে দিয়াই “ছা ছ্যা” করিয়া ভূমিতে থুথু ফেলিল। বোধিসত্ত্ব জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হইয়াছে কুমার ?” কুমার বলিল, “মহাশয়, এখনি এই বৃক্ষ হলাহল বিষের মত ; বড় হইলে না জানি ইহার দ্বারা কত লোকের প্রাণনাশ ঘটবে।” ইহা বলিয়া সে নিমের চারাটা উপড়াইয়া হস্তের দ্বারা মর্দন করিতে করিতে নিম্নলিখিত গাথা পাঠ করিল :- অন্ধুরে যে বৃক্ষ হেন বিষোপম, বৰ্দ্ধিত হইবে যবে, ফল খেয়ে তার শত শত জীব, নিশ্চিত বিনষ্ট হবে। ইহা শুনিয়া বোধিসত্ত্ব বলিলেন, “কুমার এই নিম্ববৃক্ষ এখনই এমন তিক্ত, বড় হইলে না। জানি আরও কি হইবে, ইহা ভাবিয়া তুমি ইহাকে উৎপাটিত ও মৰ্দিত করিলে। তুমি এই চারাটার সম্বন্ধে যাহা করিলে, এই রাজ্যের অধিবাসীরাও তোমার সম্বন্ধে তাঁহাই করিবে। তাহারা ভাবিবে, “এই কুমার বাল্যকালেই যখন এমন উগ্ৰস্বভাব ও নিষ্ঠুর হইল, তখন বড় হইয়া রাজপদ পাইলে ইহার প্রকৃতি আরও ভীষণ হইবে। ইহা দ্বারা আমাদের কোনও উন্নতি হইবে ন! * অতএব তাহারা তোমাকে রাজ্য দিবে না, এই নিম্ববৃক্ষের মত উৎপাটিত করিয়া রাজ্য হাঁটতে দুৱ করিয়া দিবে। সেই নিমিত্ত বলিতেছি। এই নিম্ববৃক্ষের দৃষ্টান্ত দ্বারা সাৱধান হইতে শিক্ষা করি ; অতঃপর ক্ষান্তিমান ও মৈত্রীসম্পন্ন হও ।” বোধিসত্বের এই উপদেশ শুনিয়া কুমারের মতি ফিরিয়া গেল। তিনি তদবধি ক্ষান্তিমান

  • পাত্র, ত্রিচীবর, কায়বন্ধন, বাসি, সুচি ও পরিস্রাবণ ।