বিদেশী সকল ভাইকে লইয়া—যাহাতে সেই বিরাট্ সারস্বত মন্দিরের প্রাঙ্গণে উপস্থিত হইতে পারি, সেই চেষ্টা আমাকে করিতে হইবে। ক্ষুদ্র আপনাকে ভুলিয়া বৃহৎকে বরণ করিয়া লইতে হইবে। অল্পে সুখ নাই, যাহা ভূমা—বিরাট্—তাহাতে আত্মবিসর্জ্জন করিতে হইবে।[১] তবে ত মুক্তি। যত সঙ্কোচ, বন্ধন তত কঠোর; যত প্রসার, মুক্তি তত সম্মুখে। বাহু প্রসারণ করিয়া সমগ্র ভারতকে আলিঙ্গন করিতে হইবে,—আপনার বুকের মধ্যে টানিয়া আনিতে হইবে,—বাঙ্গালায় রামপ্রসাদের “মিঠের লোভে তেতোমুখে সারাদিনটা গেল”[২]—ক্রন্দনের করুণস্বরে নিদ্রিত গুর্জ্জরের চৈতন্য সম্পাদন করিতে হইবে, আবার রাজপুতানার ভট্টকবির উৎসাহপূর্ণ সঙ্গীতের সঞ্জীবনমন্ত্রে বঙ্গসাহিত্যের কোমল প্রাণে নবীন আশার আলোক ফুটাইতে হইবে।
অন্যের যাহা ভাল, তাহা আমাকে লইতে হইবে; আমার যদি কিছু ভাল থাকে, তাহা অন্যকে অঞ্জলি পূরিয়া দিতে হইবে। এইরূপ আদান-প্রদান ছাড়া আমাদের সাহিত্যের প্রকৃত অভ্যুদয়ের আশা নাই, পূর্ণত্ব-লাভের সম্ভাবনা নাই। এমন একটি সাধারণ উপায় নির্দ্ধারণ করিতে হইবে, যাহার আশ্রয়ে বঙ্গ, বিহার, উৎকল, মাদ্রাজ, গুর্জ্জর, রাজপুতানা, গান্ধার, পাঞ্জাব—সব এক সূত্রে গ্রথিত ও সাহিত্যের এক সমতটে সমবেত হইতে পারে। বাঙ্গালার শ্যামা-