পাতা:জাপানে-পারস্যে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩৬
জাপানে-পারস্যে

উত্তর দিকটা পড়ল রুশীয়ের ভাগে, দক্ষিণ দিকটা ইংরেজের, অল্প একটু খানি বাকি রইল সেখানে পারস্যের বাতি টিমটিম করে জ্বলছে।

 রাজায় প্রজায় করার বেড়ে চলল। একদিন রাজার দল মোল্লার দলে মিশে পড়ল গিয়ে শহরের উপর, পার্লামেণ্টের বাড়ি দিলে ভূমিসাৎ করে। কিন্তু দেশকে দাবিয়ে দিতে পারল না। আবার একবার নতুন করে কনস্টিট্যুশনের পত্তন হল।

 ইংরেজ ও রুশ উভয়েই মনে অত্যন্ত ব্যথা পেয়েছে শাহকে দেশের লোক এমন বিরকম ব্যস্ত করছে বলে। বলাই বাহুল্য নতুন কনস্টিট্যুশনের প্রতি তাদের দরদ ছিল না। রুশীয় কর্ণেল লিয়াকভ একদিন সৈন্য নিয়ে পড়ল পার্লামেণ্টের উপরে। লড়াই বেধে গেল, বড়ো বড়ো অনেক সদস্য গেলেন মারা, কেউবা হলেন বন্দী, কেউবা গেলেন পালিয়ে লণ্ডন টাইমস বললেন, স্পষ্টই প্রমাণ হচ্ছে স্বরাজতন্ত্র ওরিয়েণ্টালদের ক্ষমতার অতীত।

 তেহেরানকে ভীষণ অত্যাচারে নির্জীব করলে বটে কিন্তু অন্য প্রদেশে যুদ্ধ চলতে লাগল। শেষে পালাতে হল রাজাকে দেশ ছেড়ে, তাঁর এগারো বছরের ছেলে উঠলেন রাজগদিতে। রাজা যাতে মোটা পেন্সন পান ইংরেজ এবং রুশ তার ব্যবস্থা করলেন। রুশীয়ের সাহায্যে পলাতক রাজা আবার এসে দেশ আক্রমণ করলেন। হার হল তাঁর।

 আমেরিকা থেকে মর্গ্যান শুটার এলেন পারস্যের বিধ্বস্ত রাজত্ব বিভাগকে খাড়া করে তুলতে। ঠিক যে সময়ে তিনি কৃতকার্য হয়েছেন রাশিয়া বিরুদ্ধে লাগল। পারস্যের উপর হুকুম জারি হল শুসটারকে বিদায় করতে হবে। প্রস্তাব হল ইংরেজ এবং রুশের সম্মতি ব্যতীত কোনো বিদেশীকে রাষ্ট্রকার্যে আহ্বান করা চলবে না। এ নিয়ে পার্লামেণ্টে বিরুদ্ধ আন্দোলন চলল। কিন্তু টিকল না। শুসটার নিলেন