পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী
১১৯

নয়। তার একটি অন্তরমহল আছে। সে অনেক দিন থেকেই Kingdom of Heavensকে স্বীকার করে আস্‌চে। সেখানে নম্র যে, সে জয়ী হয়; পর যে, সে আপনার চেয়ে বেশী হয়ে ওঠে। কৃতকর্ম্মত নয়, পরমার্থই সেখানে চরম সম্পদ। অনন্তের ক্ষেত্রে সংসার সেখানে আপনার সত্য মূল্য লাভ করে।

 যুরোপীয় সভ্যতার এই অন্তরমহলের দ্বার কখনো কখনো বন্ধ হয়ে যায়, কখনাে কখনাে সেখানকার দীপ জ্বলে না। - তা হোক, কিন্তু এ মহলের পাকা ভিৎ,—বাইরের কামান গোলা এর দেয়াল ভাঙতে পারবে না—শেষ পর্য্যস্তই এ টিকে থাক্‌বে, এবং এইখানেই সভ্যতার সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে।

 আমাদের সঙ্গে যুরোপের আর কোথাও মিল যদি না থাকে, এই বড় জায়গায় মিল আছে। আমরা অন্তরতর মানুষকে মানি—তাকে বাইরের মামুষের চেয়ে বেশী মানি। যে জন্ম মানুষের দ্বিতীয় জন্ম, তার জন্যে আমরা বেদন অনুভব করি। এই জায়গায়, মামুষের এই অন্তরমহলে, য়ুরোপের সঙ্গে আমাদের যাতায়াতের একটা পদচিহ্ন দেখ্‌তে পাই। এই অন্তরমহলে মামুষের যে-মিলন,সেই মিলনই সত্য মিলন। এই মিলনের দ্বার উদ্‌ঘাটন করবার কাজে বাঙ্গালীর আহবান আছে, তার অনেক চিহ্ন অনেকদিন থেকেই দেখা যাচ্চে।

সমাপ্ত