পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী

না,―হাজার হাজার অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে আপনাকে দেখ্‌তে চেষ্টা করছে। যা-কিছু ঘট্‌ছে এবং যা-কিছু ঘট্‌তে পারে, সমস্তর ভিতর দিয়ে নিজেকে বাজিয়ে দেখ্‌চে।

 এই যে আমার এক-আমি, এ বহুর মধ্যে দিয়ে চলে’ চলে’ নিজেকে নিত্য উপলব্ধি করতে থাকে। বহুর সঙ্গে মানুষের সেই একের মিলনজাত রসের উপলব্ধিই হচ্চে সাহিত্যের সামগ্রী। অর্থাৎ দৃষ্ট বস্তু নয়, দ্রষ্টা আমিই তার লক্ষ্য।

তোসা মারু জাহাজ ২০শে বৈশাখ, ১৩২৩।


 বৃহস্পতিবার বিকেলে সমুদ্রের মোহানায় পাইলট নেবে গেল। এর কিছু আগে থাক তেই সমুদ্রের রূপ দেখা দিয়েছে। তার কূলের বেড়ি খসে’ গেচে। কিন্তু এখনও তার মাটীর রং ঘোচে নি। পৃথিবীর চেয়ে আকাশের সঙ্গেই যে তার আত্মীয়তা বেশি, সে কথা এখনো প্রকাশ হয় নি,— কেবল দেখা গেল জলে আকাশে এক-দিগন্তের মালা বদল করেচে। যে ঢেউ দিয়েচে, নদীর ঢেউয়ের ছন্দের মত তার ছোট ছোট পদ বিভাগ নয়; এ যেন মন্দাক্রান্তা—কিন্তু এখন সমুদ্রের শার্দ্দূল বিক্রীড়িত সুরু হয় নি।

 আমাদের জাহাজের নীচের তলার ডেকে অনেকগুলি ডেক প্যাসেঞ্জার; তাদের অধিকাংশ মাদ্রাজি, এবং তারা প্রায়