পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
জাপান-যাত্রী

একেবারে গায়ে গায়ে সংলগ্ন। ভাবের অসঙ্গতি ব’লে যে কোনো পদার্থ আছে, এরা তা’ যেন একেবারে জানেই না। আমাদের কলকাতায় বড়মানুষের ছেলের বিবাহ-যাত্রায় রাস্তা দিয়ে যেমন সকল রকমের অদ্ভুত অসামঞ্জস্যের বন্যা বয়ে যায়— কেবলমাত্র পুঞ্জীকরণটাই তার লক্ষ্য, সজ্জীকরণ নয়,—এও সেই রকম। এক ঘরে অনেকগুলো ছেলে থাক্‌লে যেমন গোলমাল করে, সেই গোলমাল করাতেই তাদের আনন্দ—এই মন্দিরের সাজসজ্জা, প্রতিমা, নৈবেদ্য, সমস্ত যেন সেইরকম, ছেলেমানুষের উৎসব—তার মধ্যে অর্থ নেই, শব্দ আছে। মন্দিরের ঐ সোনা-বাঁধানো পিতল-বাঁধানো চূড়াগুলি ব্রহ্মদেশের ছেলেমেয়েদের আনন্দের উচ্চহাস্য মিশ্রিত হো হো শব্দ—আকাশে ঢেউ খেলিয়ে উঠ্‌চে। এদের যেন বিচার করবার, গম্ভীর হবার বয়স হয়নি। এখানকার এই রঙিন মেয়েরাই সব চেয়ে চোখে পড়ে। এদেশের শাখাপ্রশাখা ভরে এরা যেন ফুল ফুটে রয়েছে। ভুঁইচাঁপার মত এরাই দেশের সমস্ত—আর কিছু চোখে পড়ে না।

 লোকের কাছে শুন্‌তে পাই, এখানকার পুরুষেরা অলস ও আরামপ্রিয়; অন্য দেশের পুরুষের কাজ প্রায় সমস্তই এখানে মেয়েরা করে’ থাকে। হঠাৎ মনে আসে এটা বুঝি মেয়েদের উপরে জুলুম করা হয়েচে। কিন্তু ফলে ত তার উল্টোই দেখ্‌তে পাচ্চি—এই কাজকর্ম্মের হিল্লোলে মেয়েরা আরো যেন বেশি করে’ বিকশিত হয়ে উঠেচে। কেবল বাইরে