পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী
৪৭

করে জান্‌তে, নূতন করে ভাবতে উৎসুক। ছেলেরা নতুন জিনিষ দেখ্‌লে যেমন ব্যগ্র হয়ে ওঠে, আইডিয়া সম্বন্ধে এদের যেন সেইরকম ভাব।

 তা ছাড়া আর একটা বিশেষত্ব এই যে, একপক্ষে জাহাজের যাত্রী, আর এক পক্ষে জাহাজের কর্ম্মচারী, এর মাঝখানকার গণ্ডিটা তেমন শক্ত নয়। আমি যে এই খাজাঞ্চির প্রশ্নের উত্তর লিখ্‌তে বসব, এ কথা মনে কর্‌তে তার কিছু বাধেনি, আমি দুটো কথা শুনতে চাই, তুমি দুটো কথা বল্‌বে, এতে বিঘ্ন কি আছে? মানুষের উপর মানুষের যে একটি দাবী আছে, সেই দাবীটা সরলভাবে উপস্থিত কর্‌লে মনের মধ্যে আপনি সাড়া দেয়, তাই আমি খুসি হয়ে আমার সাধ্যমত এই আলোচনায় যোগ দিয়েচি।

 আর একটা জিনিষ আমার বিশেষ করে চোখে লাগ্‌চে। মুকুল বালকমাত্র, সে ডেকের প্যাসেঞ্জার। কিন্তু জাহাজের কর্ম্মচারীরা তার সঙ্গে অবাধে বন্ধুত্ব কর্‌চে। কি করে জাহাজ চালায়, কি করে সমুদ্রে পথ নির্ণয় করে, কি করে গ্রহনক্ষত্র পর্য্যবেক্ষণ কর্‌তে হয়, কাজ কর্‌তে কর্‌তে তারা এই সমস্ত তাকে বোঝায়। তা ছাড়া নিজেদের কাজকর্ম্ম আশাভরসার কথাও ওর সঙ্গে হয়। মুকুলের সখ গেল, জাহাজের এঞ্জিনের ব্যাপার দেখ্‌বে। ওকে কাল রাত্রি এগারোটার সময় জাহাজের পাতালপুরীর মধ্যে নিয়ে গিয়ে, এক ঘণ্টা ধরে সমস্ত দেখিয়ে আন্‌লে।