বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী
৭১

জটিলতা এবং জড়তার সমাবেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। চারিদিকে কেবলি জাতির সঙ্গে জাতির বিচ্ছেদ, নিয়মের সঙ্গে কাজের বিরোধ, আচার-ধর্ম্মের সঙ্গে কাল ধর্ম্মের দ্বন্দ্ব।

 চীন সমুদ্র

 তোসা মারু জাহাজ


১২

 ১৬ জ্যৈষ্ঠ। আজ জাহাজ জাপানের “কোবে” বন্দরে পৌঁছবে। কয়দিন বৃষ্টিবাদলের বিরাম নেই। মাঝে মাঝে জাপানের ছোট ছোট দ্বীপ আকাশের দিকে পাহাড় তুলে সমুদ্র যাত্রীদের ইসারা করচে—কিন্তু বৃষ্টিতে কুয়াশাতে সমস্ত ঝাপসা;― বাদ্‌লার হাওয়ায় সর্দ্দিকাশি হয়ে গলা ভেঙে গেলে তার আওয়াজ যেরকম হয়ে থাকে, ঐ দ্বীপগুলোর সেইরকম ঘোরতর সর্দ্দির আওয়াজের চেহারা। বৃষ্টির ছাঁট এবং ভিজে হাওয়ার তাড়া এড়াবার জন্যে, ডেকের এধার থেকে ওধারে চৌকি টেনে নিয়ে নিয়ে বেড়াচ্চি।

 আমাদের সঙ্গে যে জাপানী যাত্রী দেশে ফিরচেন, তিনি আজ ভোরেই তাঁর ক্যাবিন ছেড়ে একবার ডেকের উপর উঠে এসেচেন, জাপানের প্রথম অভ্যর্থনা গ্রহণ কর্‌বার জন্যে। তখন কেবল একটি মাত্র ছোট নীলাভ পাহাড় মানসসরোবরের মস্ত একটি নীল পদ্মের কুঁড়িটির মত জলের উপরে জেগে রয়েচে। তিনি স্থির নেত্রে এইটুকু কেবল দেখে নীচে নেবে গেলেন,