পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুখ না দুঃখ ? ২৯ লইয়াই জীবন ও জীবনের সমুদায় কার্য্য ; বুদ্ধি, কি চিন্তা, কি অন্তান্ত মানসিক বৃত্তিত ইচ্ছারই ভরণপোষণ ও পরিচর্য্য কার্য্যে নিযুক্ত। সেই ইচ্ছার অর্থ কি ? না, বর্তমান অভাবের, বর্তমান ক্লেশের, দুীকরণের প্রবৃত্তি। অর্থাৎ জীবন মূলেই দুঃখময়, অভাবময় । অভাবময়ত না থাকিলে ইচ্ছা থাকিত না, জীবনের অবিশুকত থাকিত না । জীবনের সংজ্ঞাই যেখানে দুঃখময়ত হইল, দুঃখময়তার ক্রমিক প্রবাহই জীবনের স্রোত হইল, দুঃখময়তার দূরীকরণের নিষ্ফল আয়াসই জীবনের সমাপ্তি হইল, সেখানে জীবন দুঃখময়, কি সুখময়, তাহ প্রশ্ন করা বাতুলত । যেখানে অভাবের শেষ, সেই খানে জীবনপ্রবাহও রুদ্ধ, অভাবের পরম্পরাতেই জীবলীলা । বঁচিবার ইচ্ছা সুখের ইচ্ছা নহে, দুঃখ হইতে নিস্কৃতির ইচ্ছা ; তবে নিস্কৃতি হয় না । জীবন দুঃখময়, যেহেতু জীবন জীবন । তবে সুখ বলিয়া কি কিছুই নাই ? সুখ দুঃখের অভাবমাত্র । আর সুখের নিরপেক্ষ অস্তিত্বই যদি স্বীকার করা যায়, তাহতেই বা কি দেখা যায় ? ধর মুখও আছে, দুঃখ ও আছে । কিন্তু সুখের তীব্রতা নাই ; দুঃখের তীব্রতা আছে । ‘সুখ যত স্থায়ী হয়, তত কমে ; দুঃখ যত থাকে, তত বাড়ে । এমন কি, অতিরিক্ত সুখই দুঃখ হইয়া দাড়ায় ; দুঃখকে মুখ কুইতে কখনও দেখা যায় না । সংসারে চাহিয়া দেখ, শোক, হিংসা, ঈর্ষ্য, পরিতাপ সবই দুঃখময় ;–যৌবন, স্বাধীনতা, দুঃপের তাৎকালিক অভাব মাত্র ; ধন, মান, প্রণয়, সুখের আশা দেয়, কিন্তু আনে দুঃখ ; স্নেহ, দয়া, মমতা, ইহারাত অধিকাংশ দুঃখেরই মূল ;–জ্ঞান, ধৰ্ম্ম, তাহারা ত অন্তদৃষ্টির প্রসার বাড়াইয়া, অনুভূতির তীক্ষুত জন্মাইয়া দুঃখভোগেরই সুবিধা করিয়া দেয়” । *

  • Sidgwick's History of Ethics, P. 273.