পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিরালোক একবার নক্ষত্রের দিকে চাই—একবার প্রান্তরের দিকে অামি অনিমিখে । ধানের খেতের গন্ধ মুছে গেছে কবে জীবনের থেকে যেন ; প্রান্তরের মতন নীরবে বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বনকে নিয়ে ঘুম পায় তার ; ق নক্ষত্রেরা বাতি জেদ্বলে—জেৰলে—জেদলে—‘নিভে গেলে—নিভে গেলে ? বলে তারে জাগায় আব জাগায় আবার ! বিক্ষত খড়ের বোঝা বকে নিয়ে—বকে নিয়ে ঘমে পায় তার, ৰাম পায় তার । জনেক নক্ষত্র ভরে গেছে এই সন্ধ্যার আকাশ—এই রাতের আকাশ ; এইখানে ফাল্গনে ছায়ামাখা ঘাসে শময়ে আছি ; এখন মরণ ভালো,—শরীরে লাগিয়া র'বে এইসব ঘাস ; জনেক নক্ষত্র রবে চিরকাল যেন কাছাকাছি । কে যেন উঠিল হোঁচে, হামিদের মরখটে কানা ঘোড়া বুঝি ! সারাদিন গাড়ি-টানা হলো ঢের,—ছটি পেয়ে জ্যোৎস্নায় নিজে মনে খেয়ে যায় ঘ যেন কোনো ব্যথা নাই পথিবীতে,—আমি কেন তবে মৃত্যু খুজি ? কেন মত্যু খোজো তুমি ?–চাপা ঠোঁটে বলে দর কৌতুকৗ আকাশ । ঝাউফলে ঘাস ভরে—এখানে ঝাউয়ের নিচে শয়ে আছি ঘাসের উপরে ; কাশ আর চোরকটিা ছেড়ে দিয়ে ফড়িং চলিয়া গেছে ঘরে । সন্ধ্যার নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন পথে কোন ঘরে যাবো । কোথায় উদ্যম নাই,কোথায় আবেগ নাই,—চিন্তা স্বপ্ন ভুলে গিয়ে শান্তি আমি পা রাত্রের নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন পথে যাবো? "তোমারি নিজের ঘরে চলে যাও?—বলিল নক্ষত্র চুপে হেসে– ‘অথবা ঘাসের পরে শ'য়ে থাকো আমার মুখের রুপ ঠায় ভালোবেসে ; অথবা তাকায়ে দ্যাখো গোরুর গাড়িটি ধীরে চলে যায় অন্ধকারে সোনালি খড়ের বোঝা পিছে তার সাপের খোলশ, নালা, খলখল অন্ধকার—শান্তি তার রয়েছে সমখে চলে যায় চুপে-চুপে সোনালি খড়ের বোঝা বনকে ;– যদিও মরেছে ঢ়ের গন্ধব', কিন্নর, যক্ষ,—তব্য তার মৃত্যু নাই মুখে । ১০২