পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ধকার হাংড়ায়ে ধীরে-ধীরে দেশলাই খুজি ; যখন জালিব আলো কার মুখ দেখা যাবে বলিতে কি পারো । কার মখে ?—আমলকী শাখার পিছনে শিঙের মতন বাঁকা নীল চাঁদ একদিন দেখেছিলো তাহা ; . এ-ধসর পা-ডুলিপি একদিন দেখেছিলো, আহা, সে-মুখ ধুসরতম আজ এই পৃথিবীর মনে । তব এই পথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে, পথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন, মানুষ রবে না আর, রবে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখন ঃ সেই মুখ আর আমি রবো সেই সবপ্নের ভিতরে । বলিল অশ্বথ সেই বলিল অশ্বখ ধীরে ঃ "কোন দিকে যাবে বলো—তোমরা কোথায় যেতে চাও? এতদিন পাশাপাশি ছিলে, আহা, ছিলে কত কাছে ; স্নান খোড়ো ঘরগুলো—আজো তো দাঁড়ায়ে তারা আছে ; এইসব গহ মাঠ ছেড়ে দিয়ে কোন দিকে কোন পথে ফের তোমরা যেতেছ চ'লে পাই নাকো টের ! বোচকা বেধেছো ঢের,—ভোলো নাই ভাঙা বাটি ফুটো ঘটিটাও ; আবার কোথায় যেতে চাও ? ‘পঞ্চাশ বছরও হায় হয়নিকো,—এই-তো সে-দিন তোমাদের পিতামহ, বাবা, খড়ো, জেঠামহাশয় —আজও, আহা, তাহাদের কথা মনে হয় 1— এখানে মাঠের পারে জমি কিনে খোড়ো ঘর তুলে এই দেশে এই পথে এই সব ঘাস ধান নিম জামরলে জীবনের ক্লান্তি ক্ষুধা আকাঙ্ক্ষার বেদনার শমধেছিলো ঋণ ; দড়িায়ে-দাঁড়ায়ে সব দেখেছি যে,—মনে হয় যেন সেই দিন । "এখানে তোমরা তব থাকিবে না ? যাবে চলে তবে কোন পথে । সেই পথে আরো শান্তি—আরো বুঝি সাধ ? s আরো বুঝি জীবনের গভীর আসবাদ ? তোমরা সেখানে গিয়ে তাই বুঝি বেধে রবে আকাঙ্ক্ষার ঘরযেখানেই যাও চ’লে, হয় নাকো জীবনের কোনো রপোন্তর ; এক ক্ষুধা এক স্বপ্ন এক ব্যথা বিচ্ছেদের কাহিনী ধসের - মান চুলে দেখা দেবে যেখানেই বাঁধো গিয়ে আকাংক্ষার ঘর ' বলিল অঙ্গবখ সেই ন'ড়ে-ন'ড়ে অন্ধকারে মাথার উপর । 64