পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঠের আঁধার পথে শিশু কাঁদে—লালপেড়ে পরোনো শাড়ির ছবিটি মুছিয়া যায় ধীরে-ধীরে—কে এসেছে আমার নিকট? ‘কার শিশু? বল তুমি’ : শুধালাম; উত্তর দিল না কিছু বট; কেউ নাই কোনোদিকে—মাঠে পথে কুয়াশার ভিড়; তোমারে শুধাই কবি : ‘তুমিও কি জান কিছু এই শিশুটির।’

সোনার খাঁচার বুকে রহিব না আমি আর শুকের মতন

সোনার খাঁচার বুকে রহিব না আমি আর শুকের মতন; কি গল্প শুনিতে চাও তোমরা আমার কাছে—কোন গান, বলো, তা’হলে এ-দেউলের খিলানের গল্প ছেড়ে চলো, উড়ে চলো,— যেখানে গভীর ভোরে নোনাফল পাকিয়াছে,— আছে আতাবন; পউষের ভিজে ভোরে, আজ হায় মন যেন করিছে কেমন;— চন্দ্রমালা, রাজকন্যা, মুখ তুলে চেয়ে দ্যাখো - শুধাই, শুন লো, কি গল্প শুনিতে চাও তোমরা আমার কাছে –কোন গান, বলো, আমার সোনার খাঁচা খুলে দাও, আমি যে বনের হীরামন;

রাজকন্যা শোনে নাকো —আজ ভোরে আরসাঁতে দেখে নাকো মুখ, কোথায় পাহাড় দূরে শাদা হয়ে আছে যেন কড়ির মতন— সেই দিকে চেয়ে চেয়ে দিনভোর ফেটে যায় রুপসীর বুক; তবুও সে বোঝে না কি আমারো যে সাধ আছে—আছে আনমন আমারো যে... চন্দ্রমালা, রাজকন্যা, শোনো শোনো তোলো তো চিবুক। হাড়পাহাড়ের দিকে চেয়ে-চেয়ে হিম হয়ে গেছে তার স্তন!

কত দিন সন্ধ্যার অন্ধকারে মিলিয়াছি আমর। দু’জনে কত দিন সন্ধ্যার অন্ধকারে মিলিয়াছি আমরা দু'জনে ; আকাশ প্রদীপ জেলে তখন কাহারা যেন কাতিকের মাস সাজায়েছে,—মাঠ থেকে গাজন গানের মান ধোঁয়াটে উচ্ছবাস ভেসে আসে ; - ডানা তুলে সাপমাসী উড়ে যায় আপনার মনে আনন্দ বনের দিকে ;–একদল দTড়কাক মান গঞ্জেরণে নাটার মতন রাঙা মেঘ নিঙড়ায়ে নিয়ে সন্ধ্যার আকাশ দ’ম হাত ভ'রে রাখে—তারপর মৌরির গন্ধমাখা-ঘাস পড়ে থাকে ; লক্ষমীপেচা ডাল থেকে ডালে শুধু উড়ে চলে বনে আধ-ফোটা জ্যোৎস্নায় ; তখন ঘাসের পাশে কতোদিন তুমি হলুদ শাড়িটি বৃকে অন্ধকারে ফিঙ্গার পাখনার মতো বসেছ আমার কাছে এইখানে—আসিয়াছে শাঁটবন চুমি -গভীর অ*াধার আরো—দেখিয়াছি বাদাড়ের মদ অবিরত আসা-যাওয়া আমরা দু’জনে ব’সে—বলিয়াছি ছোঁড়াফ"াড়া কতো মাঠ ও চাঁদের কথা ঃ মান চোখে একদিন সব শনেছ তো ! . SGky