পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভালো লাগে এই যে অশ্ববখপাতা আমপাতা সারা রাত ঝরে । এই জল ভালো লাগে ; বৃষ্টির রূপালি জল কতো দিন এসে এই জল ভালো লাগে ;—বটির রপোলি জল কতো দিন এসে ধয়েছে আমার দেহ—বলায়ে দিয়েছে চুল—চোখের উপরে তার শাস্ত সিনগধ হাত রেখে কতো খেলিয়াছে,— আবেগের ভরে ঠোঁটে এসে চুমো দিয়ে চ’লে গেছে কুমারীর মতো ভালোবেসে ; এই জল ভালো লাগে ;–নীলপাতা মদ ঘাস রৌদ্রের দেশে, ফিঙ্গা যেমন তার দিনগুলো ভালোবাসে — বনের ভিতরে বার বার উড়ে যায়,—তেমনি গোপন প্রেমে এই জল ঝরে আমার দেহের পরে আমার চোখের পরে ধানের আবেশে ঝ’রে পড়ে ;—যখন অস্ত্রাণ রাতে ভরা ক্ষেত হয়েছে হলুদ, যখন জামের ডালে পে“চার নরম হিম গান শোনা যায়, বনের কিনারে ঝরে যেই ধান বলকে ক’রে শান্ত শালি-খন্দ, তেমনি ঝরিছে জল আমার ঠোঁটের পরে—চোখের পাতায়— আমার চুলের পরে ;–অপরাহ্নে রাঙা রোদ সবুজ অ্যতায় রেখেছে নরম হাত যেন তার—ঢালিছে বুকের থেকে দগধ । একদিন পৃথিবীর পথে আমি ফলিয়াছি ; আমার শরীর একদিন পথিবীর পথে আমি ফলিয়াছি ; আমার শরীর নরম ঘাসের পথে হাঁটিয়াছি ; বসিয়াছে ঘাসে দেখিয়াছে নক্ষত্ররা জোনাকিপোকার মতো কৌতুকের আমেয় আকাশে খেলা করে ; নদীর জলের গন্ধে ভরে যায় ভিজে সিনগধ তাঁর অন্ধকারে ; পথে পথে শব্দ পাই কাহাদের নরম শাড়ির, মান চুল দেখা যায় ; সান্তবনার কথা নিয়ে কারা কাছে আসে— ধসর কড়ির মতো হাতগলো—নগ্ন হাত সন্ধ্যার বাতাসে দেখা যায় ; হলদে ঘাসের কাছে মরা হিম প্রজাপতিটির সুন্দর করণ পাখা পড়ে আছে—দেখি আমি ; চুমে থেমে থাকি ; আকাশে কমলা রঙ ফুটে ওঠে সন্ধ্যায়—কাকগুলো নীল মনে হয় ; অনেক লোকের ভিড়ে ডুবে যাই—কথা কই—হাতে হাত রাখি ; করণ বিষন্ন চুলে কার যেন কোথাকার গভীর বিস্ময় লকায়ে রয়েছে বুঝি.নক্ষত্রের নিচে আমি ঘামাই একাকী ; পেচার ধসের ডানা সারারাত জোনাকির সাথে কথা কয় । পৃথিবীর পথে আমি বহুদিন বাস করে হৃদয়ের নরম কাতর পথিবীর পথে আমি বহুদিন বাস ক’রে হৃদয়ের নরম কাতর অনেক নিভত কথা জানিয়াছি ; পথিবীতে আমি বহুদিন ՏծՀ