পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যদিও বীণার মতো বেজে ওঠে হৃদয়ের বন একবার—দুইবার—জীবনের অধীর আঘাতে,— তবz—প্রেম—তবু তারে ছি*ড়ে ফে'ড়ে গিয়েছে কখন ! তেমন ছি*ড়িতে পারে প্রেম শতধনু-—অন্ত্রাণের রাতে হাওয়া এসে যেমন পাতার বনক চ’লে গেছে ছিড়ে । পাতার মতন ক’রে ছি*ড়ে গেছে যেমন পাখিরে । তব পাতা—তবুও পাখির মতো ব্যথা বলকে ল’য়ে, বনের শাখার মতো—শাখার পাখির মতো হ’য়ে হিমের হাওয়ার রাতে আকাশের নক্ষত্রের তলে বিদীণ শাখার শবেদ—অসুস্থ ডানার কোলাহলে, ঝড়ের হাওয়ার শেষে ক্ষীণ বাতাসের মতো ব’য়ে, আগমনে জৰলিয়া গেলে অঙ্গারের মতো তবল জলে আমাদের এ-জীবন –জীবনের বিহবলতা স’য়ে আমাদের দিন চলে,—আমাদের রাত্রি তব চলে ; তার ছিড়ে গেছে,—তবু তাহারে বীণার মতো ক’রে বাজাই,—যে-প্রেম চলিয়া গেছে তার হাত ধ’রে । কারণ, সমযের চেয়ে, আকাশের নক্ষত্রের থেকে প্রেমের প্রাণের শক্তি বেশি ;–তাই রাখিয়াছে ঢেকে পাখির মায়ের মতো প্রেম এসে আমাদের বসুক ! সুস্থ ক’রে দিয়ে গেছে আমাদের রক্তের অসুখ । পাখির শিশুর মতো যখন প্রেমেরে ডেকে-ডেকে রাতের গনহার বদকে ভালোবেসে লুকায়েছি মুখ,— ভোরের আলোর মত চোখের তারায় তারে দেখে !— প্রেম কি আসেনি তব ?—তবে তার ইশারা আসকে r প্রেম কি চলিয়া যায় প্রাণের জলের ঢেউয়ে ছি"ড়েe! ঢেউয়ের মতন তবু তার খোঁজে প্রাণ অাসে ফিরে । যতদিন বেচে অাছি আলেয়ার মতো আলো নিয়ে,—— তুমি চ’লে অভ্যাস প্রেম,—তুমি চ’লে অভ্যাস কাছে প্রিয়ে ! নক্ষত্রের বেশি তুমি,—নক্ষত্রের আকাশের মতো ! আমরা ফুরায়ে যাই,—প্রেম, তুমি হও না আহত ! বিদ্যতের মতো মোরা মেঘের গনহার পথ দিয়ে চলে আসি,—চলে যাই,—আকাশের পারে ইতস্তত !— ভেঙে যাই,—নিভে যাই,—আমরা চলিতে গিয়ে-গিয়ে । আাকাশের মতো তুমি,—আকাশে নক্ষত্র অাছে যতো,— তাদের সকল আলো একদিন নিভে গেলে পরে,— তুমিও কি ডুবে যাবে, ওগো প্রেম, পশ্চিম সাগরে । <<