পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিলাম ঃ “ঐ দ্যাখো—দ্যাখা যায় তমালের হিজলের অশথের শাখা আর ঐ নদীটিরে দেখা যায়—আমার গায়ের নদীটিকে—’ চলে গেল তব সে যে কুয়াশার দিকে। তারপর সাত-দিন সাত-রাত কেটে গেল পথিবীর আলো-অন্ধকারে আবার চলেছি উড়ে একা-একা শকুনের কালো পাখা মেলে পথিবীতে তাহাদের দেখিয়াছি—আজো তারা মনে ক’রে রেখেছে আমারে, ভালোবেসে ;–রপ্তমাংসে থাকিতাম তব যদি—আমার এসংসগেরভালোবাসা পেলে রোজ ভোরে রোজ রাতে আমারে নতুন ক’রে পেলে । তাহারা বাসিত ভালো আরো বেশি–আরো বেশি—এই শধে—আর কিছ নয়— সাত-দিন সাত-রাত তাহাদের জানালায় পদয়ি উড়ে-উড়ে কেবল ভেবেছি এই কথা আবার পেতাম যদি সে-শরীর-সে-জীবন —তাহলে প্রণয়প্রেমসত্যহত ; আজতা বিসময় আজ তা বিসময় শুধু—শধ্যে সমতি শধে ভুল—হয়তো কতব্য বিহবলতা ঃ সাত-রাত সাত-দিন পথিবীতে কেবলি ভেবেছি এই কথা । তারপর মৃত্যু তাই চাহিলাম—মৃত্যু ভালো-মৃত্যু তাই আর একবার, বিবণ বিস্তৃত পাখা মেলে দিয়ে মাঝ-শন্যে আমি ক্ষিপ্ৰ শকুনের মতো উড়িতেছি—উড়িতেছি ;–ছটি নয়—খেলা নয়—স্বপ্ন নয়—যেইখানে জলের অ’াধার বৈতরণী বৈতরণী—শান্তি দেয়—শান্তি–শান্তি—ঘম—ঘম ঘমে— অবিরত তারি দিকে ছয়টিতেছি আমি ক্লান্ত শকুনের মতো ! नग्नोज्ञा বাইচর ঝোপ শুধু—শ'ইবাবলার ঝাড়—আম জাম হিজলের বন,— কোথাও অজনে গাছ—তাহার সমস্ত ছায়া,—এদের নিকটে টেনে নিয়ে কোন কথা সারাদিন কহিতেছে অই নদী এ-নদী কে ?—ইহার জীবন হৃদয়ে চমক আনে ;– যেখানে মানুষ নাই—নদী শধে –সেইখানে গিয়ে শবদ শনি তাই আমি ;-আমি শনি—দপরের জলপিপি শুনেছে এমন এই শব্দ কতোদিন ;–আমিও শুনেছি ঢের বটের পাতার পথ দিয়ে হেটে যেতে—ব্যথা পেয়ে ; দুপুরে জলের গন্ধে একবার স্তবধ হয় মন ঃ মনে হয় কোন শিশু ম'রে গেছে—আমারি হৃদয় যেন ছিলো শিশু সেই ; আলো আর আকাশের থেকে নদী যতখানি আশা করে—আমিও তেমন একদিন করিনি কি ? শুধু একদিন তব ?—কারা এসে ব’লে গেলঃ নেই গাছ নেই—রোদ নেই—মেঘ নেই—তারা নেই—আকাশ তোমার তরে নয়।’ হাজার বছর ধরে নদী তব পায় কেন এই সব ? শিশর প্রাণেই । ১৬"