পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—‘বাতিটা সরিয়ে রাখো তো’ বাতি কমিয়ে ঘরের একপাশে রেখে দিলাম । অঞ্জলি বিরস চোখে—‘অামার ঘরের ভিতর রাখলে কেন ? ” ‘একেবারে নিভিয়ে দেব ।” কেন ?” অন্ধকারের মধ্যে জানলার ভিতর দিয়ে স্নিগ্ধ জ্যোৎস্না নেমে এল । অঞ্জলি ধীরে-ধীরে উঠে গিয়ে কলসীর থেকে দু-তিন প্লাশ জল গড়িয়ে নিয়ে মাথায় ঢালতে- ঢালতে বললে —“তুমি এখন যাও ।” —“কোথায় যাব ? ‘অামি একটু নিরিবিলি হয়ে থাকতে চাই ।” ‘একটা অ্যাসপিরিন খাবে ?” “শো ও ; অামি তোমাকে বাতাস দেই ।” অঞ্জলি একটু হেসে-“তোমাকেই-বা কদিন বাতাস দেই অামি ? মাথা কি অামারই ধরে শুধু— তোমার কোনো রোগ হয় না কোনোদিন ? একা পড়ে থাকো— অামাকেও একা পড়ে থাকতে দাও ।” বকতে-বকতে বিছানায় এসে বসল। দেখলাম, সমস্ত মাথার জলে শাড়ি ছব ছাব করে জিছে । বললাম—-“মুছবে না, অঞ্জলি ?” — ‘না বেশ তারাম লাগছে ‘গায়ে জল বসে যাবে তো —” খানিকক্ষণ মাথা চটকায় । ছপ করে শেষে—“হঁ।া— বাতিটা জ্বালিয়ে একটু কমিয়ে দিয়ে চলে যাও তুমি । এইবার দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়ব ।” -“বাতি জ্বালানোর কী দরকার ?” ‘অাচচ্ছা বেশ, আমিই না-হয় জালিয়ে নেব—দেশলাইটা—” - -“খেয়েছ ?” – ‘না । —“খিদে নেই ? ” —‘না । ।