পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নেব।'
পূর্ণিমা একটু নিস্তার পেয়ে বললে- 'ভাবছিলাম রবিনকে পড়াব, টুকুকে আমার কাছে এনে রাখব। দু বছর ধরে এই চেষ্টাই তো চলেছে। কিন্তু এখনও তা পারলাম না যে-'
সন্তোষ বললে, 'তা পারবে—পারবে। না-হয় তোমার দিদিই এখন দেখবেন।'
পূর্ণিমা মাহত হয়ে বললে –'সব দিক দিয়েই দিদির ভাগ্য আমার চেয়ে বেশি। ওদের মানুষ করার ভাগ্যও তারই হাতে -' একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে পূর্ণিমা উঠে দাঁঁডাল।
বললে –‘দিদির বিয়েটা হয়ে যাক– তার পর রবিনকে মেডিকেল লাইনে দেবার জন্য দিদিকে লিখব।'
এই প্রস্তাবের উপযুক্ততা সম্বন্ধে কোনো মন্তব্য না করে সন্তোষ বললে –'তা লিখো।'
-'তোমাবও হয় তো কিছু সুবিধে হতে পারে; মেডিকেল লাইনে নয় অবিশ্যি –কিন্তু বম্বে-টম্বের দিকে– অত বড় চাকুরে কি না-'
সে সুবিধা-অসুবিধার পরিপূর্ণবোধ সন্তোষের আছে; জীবন ঢের শিখিয়েছে তাকে। কিন্তু সে-সব উদঘাটন করে এই মেয়েটিকে তেমন কঠিন আঘাত দেওয়ার থেকে এর এই আশা-ভরসা ও স্বপ্লের ভুলের ভিতরেই পূর্ণিমাকে রেখে দেবার প্রয়োজন বোধ করছে সন্তোষ।
তার পর একদিন সুদিন যখন আসবে—এই মেয়েটিকে জীবনের নানারকম সত্য শেখানো যাবে তখন।
এই সবের জন্য অপেক্ষা করছে সন্তোষ।


চার-পাঁচ দিন পর মামাশ্বশুরের চিঠি এসেছে আবার।
সন্তোষ বললে—'কী লিখেছেন?'
পূর্ণিমা বললে—“তুমি কি কলকাতায় যাচ্ছ?'
‘কে? আমি?'

‘হ্যাঁ।'

১৫৯