পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মতন টলটলে জলের উপর সেই ৰভু-বড় ফিনফিনে মাকড়ের হাত-পা-মাথা-পেট দেখতে লাগল মার দিকে তাকাতে-তাকাতে । স্বাধীন হয়ে মার তো এই হয়েছে। স্বাধীনতার জল-ৰাতাস লাগতেই হরিলালবাবুর কলেজের কাজে হয়ে গেল বাবার, একটা দরখাস্ত মেরেই ছুটলেন তিনি কলকাতায় । কলকাতায় স্বাধীনতার আড়ে-দিযে, সমস্তটা বালি-ধুলো হলকা-হাফের মিঠে চাকলি খেতেখেতে, ঐ লোকটার হাড়গোড় যদি কালচে হয়ে পড়ে না থাকে সেই দুর্দান্ত মরুভূমিতে, তবে কী বলবে হরীত। এ তে স্বাধীনতার কলির সন্ধে । সুমনার হাত-পায়ে কেমন একটা শাখচুন্নি যেন নড়ে-চড়ে উঠছে ঘরের ভিতর । ঘরে কোনো রেড়ি-কেরোসিনের আলো নেই, চাদের আলো আছে, দেওয়ালের উপরের দিকে ভাঙা খলফার বেড়ার ফঁাক দিয়ে ভেসে আসছে । এত গরমের রাতে ঘরের দরজা-জানালা সুমন বন্ধ করে দিয়েছে সব । শরীরে রক্ত নেই তোমার, তাই ঠাণ্ডা লাগে বুঝি সব সময় ? ‘কেন ? কী হয়েছে ? ঠাণ্ডা দেখলে কোথায় ? ‘দরজা জগনলা সব বন্ধ করে বসে আছ কেন ? আমি জানলা খুলে দিচ্ছি— ‘চেণর আসতে পারে কিন্তু হিগরীত ।” ‘আসুক । ক নেবে ? সুমনকে নিশীথ দেড়শ টাকা দিয়ে গেছে, তা দিয়ে দু-তিন মাস সংসার চালাতে হবে । সে-টাকাটা সে লুকিয়ে রেখেছে ঘরের কোনো এক জায়গায় । চোর ঢুকলে অবিশ্বি বার না করে ছাড়বে না । বলবে কি সুমনা হারতকে সেই টাকাগুলোর কথা ? আজি থপক ; রাতের বেলা টাকাকড়ির কথা বলতে নেই । ‘তুমি কমু্যনিস্ট হয়ে গেছ হরীত ? তিন-চারটে জানালা খুলে হাওয়ায় একটু ঢুলছিল হারীত বিছানার এক কোণায় ; সব কথা কানে গেল না তার । ‘বলি, ও হরীত । হরীত ।

  • কেন, বল |’

‘শুদোচ্ছিলুম তুমি কি কমু্যনিস্ট হয়ে গেলে ? "কমুনিস্ট ? না। আমাদের আর-এক পাট ।

  • কী নাম তণর ?

১২১