পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কেউ না । আমার মন বলছে।’ "তোমার মন বলছে । তবেই হয়েছে’, হেসে উঠল হরীত । ষেন কিছু হয় নি, কিছু হলেও কিছুই হয় না এমনি অস্বাভাবিকভাবে হরীত হাসছে, কথা বলছে । সুমনার নাড়ী ছিড়ে হরীত একদিন বেরিয়েছিল । সেই ছেড়ার ব্যথাটাকে টেনে হি চড়ে টনটনিয়ে দিতে এসেছে হরীত । ‘রানু-ভানুর কথা বলিস ? ভাবিস ? যে ওরা তোকে আসকে পিঠে পুড়িয়ে এনে খেতে দিয়েছে ? কোনো দিনই ভালবসতি না তো আগসকে পিঠে । কিন্তু রণনু-ভানু কি তোর নিজের নয় ? ‘রানু কোথায় ? ‘কোনো খোজ নেই ।” ‘আগর-কোনো থেণজ পাওয়া গেল না তাহলে— ‘তুই তো কলকাতায় থাকিস, খুঁজে দেখছিস না ? ‘কলকাতায় আছে তোমাকে কে বললে ? যদিও বা থাকে এক কণা ভুষি হারিয়ে গেলে কি এক মাঠ ভূষির ভিতর থেকে তা তুমি খুঁজে বের করতে পারবে ?" হারাতের কথা শুনে ব্যাপারটার অদ্ভুত রকমটা সুমনার চোখে ভেসে উঠল । একটা ছেড়া ঠ্যাঙের মত পড়ে থেকে আস্তে-আস্তে বুকের কঙ্কালে হাত বুলোতে-বুলোতে থেমে রইল । ‘মসজিদে দেখেছিস ?’ "কোথাকার মসজিদে ? ‘কলকাতায়—’ ‘কোন মসজিদে ?

  • ন’খোদায়—" শুনে ঝুম মেরে হারাত সুমনার দিকে তাকিয়ে রইল। অনেকক্ষণ । কে বোকা বলে তোমাকে এই সব, হিতেন বলেছে ?

'না, অর্চনা—’ ‘অর্চনামাসি’, হারাত একটু চুপ করে থেকে বললে, ঐ মহিমের সঙ্গে থেকেথেকে মাসি মরছে । না হলে কখনো এই রকম কথা বলে ?’