পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘হারীত কোথায় ? সুমনা বললে । ‘হরীত ? আগছে । আছে।’ ‘কোথায় ?” ‘কলকাতায় হয় তো । ঝুপ করে এসে পড়বে এক দিন । 'না, না, এসেছিল সে এখানে । কাল রাতে এসেছিল । তোমাদের খবর দিতে পারি নি । তোমরা তখন ঘুমুচ্ছিলে । তোমাদের ঘরের থেকে জলের কলসিট। নিয়ে এসেছিল, কিছু খেতে দিতে পারি নি, খুব তেষ্টাও পেয়েছিল হারাতের। ঐ দেখ কলসিট ।’ কলসিটা দেখবার জন্যেই শেষ রাতে পা দিয়েছিল এই ঘরে অর্চনা । এত ক্ষণে দেখা হল । ‘হারীত এসে চলে গেল যে ?’ ‘কোথায় গেল ?’ ‘তোমাকে বলে যায় নি ? বা রে! কেমন যেন এক রকম উচ্ছুন্নে হয়ে গেছে হারীত। তোমার কথা না-শুনে চলে গেল দেখেই বোধ হয় তোমার এই হার্টের গোলমালটা হয়েছে সুমনাদি । তোমার এ রকম অবস্থা দেখে চলে গেল ? সুমনার কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছিল—কথাটা হরীতকে নিয়ে সেই জন্যে—হার্টের জন্যেও কিছু বটে, কেমন যেন হয়ে গেছে এক রকম আজকালকার ছেলেরা মেয়েরা সব। কী করবে এরা ? দেশ স্বাধীন করবে ? দেশ তো স্বাধীন হয়েছে। . ‘আমিও তো বলেছিলাম হরীতকে, এখন আবার ও-সব কী হরীত ? এখন আবার ক্ষুদিরাম, গণেশ, অনন্ত সিং, মাস্টারদা কী যে ! দেশ তো স্বাধীন হয়েছে। 'ইণ, দেশ তো স্বাধীন হয়েছে –সন্দিগ্ধভাবে ডান হাতের আঙুল মটকাতেমটকাতে বললে অর্চনা। . ‘উনিশশ বেয়াল্লিশে তো হরীত কলেজে ছিল । দিনরণত সাইকেলে আগর পায়দলে মেরে দিয়ে কত কাণ্ডই না করেছে । তখন বিশেষ কিছু বলতাম না ওকে, ওর বাবাও ওকে রেহাই দিয়েছিল, বলেছিল, আমি নিজে অবিশ্ব্যি ঠিক এ রকম করতাম না, তবে, সকলের সঙ্গে মিলে বেশ একটা কাজ হাতে নিয়েছে বটে হরীত, করুক। জিজ্ঞেস করেছিলাম, যদি মরে ? বলেছিল, মরতে হবে জেনে নিয়েই তো এই কাজে নাম, মরছেও তো অনেকে। শুধু এক হরীত ج (كالخ