পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেখান থেকে বাসে ঐ মোড়ে নামিয়ে দি ল—কুলি পেলুম না, তবে সঙ্গে জিনিস বেশি নেই—একটা সুটকেশ আর— ‘তোমার পরিবার কোথায় ? বাপের বাড়িতে ? 'না, আমার ওখানেই আছে, জলপাইহাটিতে । ‘কলেজ কি বন্ধ হয়ে গেল তোমার ?’ “হয় নি এখনও ; এক মাস ছুটি নিয়ে এসেছি । এ ছুটিটা তোমার এখানেই কাটবে, তুমি এ বাড়িতে এক আছে। তো ? আমি একটু নিরিবিলি চাচ্ছি জিতেন । তুমি এত রাতে নাচে কী করছিলে ? দোতলার দক্ষিণদিকের সেই ঘরটায় থাকো না অণজকাল ?’ ‘হঁ্যা । আমি ওপরে শুয়ে পড়েছিলুম। কড়া নাড়ার শব্দে নীচে নেমে এসেছি । এমনিও আসতুম ! ঘুম হচ্ছিল না, কয়েকটা দরকারি ফাইল নীচে পড়ে ছিল—ওপরে নিয়ে যেতে হবে P জিতেন দাশগুপ্ত ফাইলগুলোর দিকে চোখ ফিরিয়ে নাড়াচাড়া করতে-করতে বললে, ‘কাল সাতটার সময় অফিসে যেতে হবে, এখন রণত একটা । নিরিবিলি চাচ্ছে নিশীথ !’ জিতেন দাশগুপ্তের সমীচীন মুখ বেশ ভাল মানুষের মতন দেখাচ্ছিল । মুখের গাম্ভীর্যর ভিতর থেকে একটু হাসি চলকে উঠল । “যত মফস্বলের মানুষ কলকাতায় এসে আজকাল নিরিবিলি ] খোজে— নিশীথ সেন বারান্দার থেকে সুটকেশটা টেনে ঘরের ভিতরে এক কিনারে ফেলে রেখে বেডিংটা নিয়ে এল, বললে, ‘না না আজকাল নয়, মানুষের সঙ্গে চলব, ফিরব, মিশব, কিন্তু তবুও নিজের মনে নিজে থাকব । ‘হ্যা, তারই মানে তাই । আমার বাড়িটা'—জিতেন দাশগুপ্ত ফাইল উল্টেপাল্টে বললে,—‘ভগরি গলদ তো, বডড irregular । তরফদারের কাজ । কণল অফিসে এলেই ওকে আণমি—’ ফাইলগুলো ঠেলে একপাশে সাজিয়ে রেখে নিশীথের দিকে তাকপল দাশগুপ্ত । চোখের থেকে চশমাজোড়া খুলে নিয়ে আধো অন্ধ চোখে নিশীথের দিকে খুব ভরসা ভরে তাকিয়ে জিতেন বললে, ‘যা চাও তাই পাবে, আমার বাড়িটা খুব ঠাণ্ড । লোকজন নেই—অামি আর আমার স্ত্রী । ‘তোমার স্ত্রী ! নিশীথ যেন অন্ধকারে বুকে কিল খেয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে সিধে মুখে বসে রইল নিজের সুটকেশটার দিকে তাকিয়ে । অন্য 는