পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেখেছে। ঘুমিয়ে আরাম পাচ্ছে তাই ঘুমনো মানুষ। কাল ভোরের আগে নিশীথ জেগে উঠবে বলে মনে হয় না । টমাস মানের জার্মান বই নিয়ে নিজের ঘরে চলে যাবে ভাবছিল নমিতা । মাঝে-মাঝে দোষ ঢুকে পড়ে তার মনে, শরীরটাকে মুখিয়ে রাখে—মাঝে-মাঝে আত্মদানও করে বটে সে— আবার নির্দেশষভাবে ও নিজেকে অর্পণ করে, ঝর্ণার জলকণিকারণ যেমন পর স্পরকে করে—প্রকৃতির কোনো এক বৃহৎ আণদিম নাদের ভিতর জেগে ওঠে, পটভূমির নিঃশব্দতাকে প্রাণবীজ দান করে নাদের নীল নির্দোষ আনস্ত্যে পৌছবার জন্যে । নিশীথকে ডেকে জাগানো যায় অবশ্ব্যি কিংবা ঠেলে ; কিংবা ফানিটা বন্ধ করে দিলে গরমে ভেপসে উঠে পণচ-দশ মিনিটের মধ্যেই ন-জেগে পারবে কি সে এই দারুণ গুমোটের রাতে ? তা হলে মানের বই সুটো তুলে নিয়ে ফানিটা বন্ধ করেই চলে যাওয়া যাক—তার পরে নিজের ঘরে গিয়ে, ফান খুলে, পোশাক ছেড়ে, শুয়ে পড়বে সে । ঘুমিয়ে পড়লে, ঘুমিয়ে পড়বে । ঘুম ন-পেলে নমিত এ দিকে অণব (র খোজ নিতে আসবে— ঘুমের ওষুধ খাওয়ার মজিটাও যদি মরে যায় । বই টে। হাতে তুলে নিয়ে ফ্যানটা বন্ধ করে দিল সে । এইবারে ঘর থেকে স্রে ফ বেরিয়ে পড়বে, কেমন তামাসা বোধ হল, ঘরের আবিছা আলোর ভিতরে আস্তে, ধীরে-সুস্থে, হাটতে গিয়েও কেমন যেন হুমডি খেয়ে পড়ল হঠাৎ, তেপয়-বস্ট-টিন-গে লাস নিয়ে একেবারে মেঝের উপর । বালিশের থেকে মাথা তুলে ঘাড়ট। ফিরিয়ে আচ্ছন্নভাবে তাকিয়ে দেখল নিশীথ, নমিত উঠে দাড়িয়েছিল । ‘কে ? ‘অগমি ।’ ‘আমি ! আমি মানে ?”—ধেtয়াটে চোখে বললে নিশীথ । ১৫ঃ এই যে ' ভাল করে নমিতার দিকে তাকিয়ে দেখল নিশীথ, আবার তাকাল আর-একবার তাকিয়ে দেখার দরকার অনুভব করে, নির্মল দৃষ্টিশক্তিই যেন ফিরে পেল, উঠে বসল সে—‘ভোর হয়ে গেছে ? ‘এই হচ্ছে ।" “কিসের যেন একটা শব্দ হল । আমি স্বপ্ন দেখছিলুম, মনে হল, ধ্বসে ভেঙে গে ল কী যেন সব ।’