পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জল, কমলালেবু, ক্ষীরের সন্দেশ, পুডিং, ফালি করা বাতাবি লেবু, পেঁপে, অরেঞ্জ স্কেণয়ণশ, লেমন স্কোয়াশ । কিন্তু তখন তো জিতেন এক ছিল । নিজে সেধে নিশীথকে ফল মিষ্টি শরবৎ খণওয়ণত গরমের রণতে । নীচের তলায় পায়চগরি করতে-করতে নিশীথ মনে-মনে হাসছিল । জল যে ভাল জিনিস—ভারী ঠাণ্ডা—জল আর ঘুম, দোতলার খোলা ঘরের দক্ষিণt বাতাস অণর সিলিঙ ফ্যানের হাওয়ার চেয়ে স্নিগ্ধ জিনিস যে পৃথিবীতে কোথাও নারীপ্রেমেও নেই—জিতেন দাশগুপ্ত তা বুঝিয়ে দিয়েছিল একদিন । সেই জিতেনের বাড়িতেই সীমান্য এক গ্লাস জলের অভাবে আগজ মারা : পড়ছে নিশীথ । মাটিন সাহেব তো খুব ভাল মানুষ—নমিতা খারাপ মোটেই নয়, কিন্তু তবু একটি নারী যখন একজন পুরুষকে দখল করে বসে, বিয়ে হয় তখন, দুটো ভাল জিনিসের থেকে তাদের অজান্তেই বুঝি বেরিয়ে আসতে থাকে । বিবাহিতেরা সেটা বোঝে না । তারা পরস্পরকে বুকে কোলে টেনে দৈবী স্ফটিকের কাজ করে বহিঃপৃথিবীর নিশীথ আসিত পরভৃং প্রভৃতির চোখে, ক্রিস্টালের ভিতর দিয়ে তাকিয়ে চোখ মুড়োতে থাকে জীবনের মরুভূমিকে চেরাপুঞ্জি বলে ভুল না হলেও । এ না হলে এই গরমের রাতে নিশীথের জন্য এক কুঁজে জলের ব্যবস্থা না-করে ওপরে চলে গেল জিতেন ! দু-চারটে সিগারেট পর্যন্ত রেখে গেল না । জিতেনকে বলেছিল বটে নিশীথ যে দলে পড়লে এক-আধটা সিগারেট খায় সে ; কিন্তু তার মানে কি তাই ? ওপরে সিগারেটের টিন রয়েছে জিতেনের । উচিত ছিল না একট। টিন নীচে নিশীথকে দিয়ে যাওয়া—এ-রকম ইণপ-ধরা গা-পোড়া রাতে অন্ধকারটাকে পুড়িয়ে-পুড়িয়ে একটু— ‘কে ?’ নিশীথ খানিকক্ষণ সিড়ির দিকে তাকিয়ে রইল । না, কেউ নয় । এত রাতে কে আর আসবে। কর্তা গিন্নি সৰ্পকুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়েছে দোতলায়, কয়েকটা ছুঁচো আর ইদুর দণত খিচিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে, নীচে চাকর-বাকর কেউ নেই, কেউই নেই জিতেনের, এখানে যতবার এসেছে, থেকেছে, নিশীথ নীচের তলাটাকে ঘাটিয়ে দেখতে যায়নি একবারও । সবই ছিল তার দোতলায় । নীচে কী আছে, না আছে, জানেও না সে । এ ঘরে কোনো ফ্যানও নেই। নিশীথকে ゞやす