পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কেন ? ঠিকই তো বলছিলেন । এমনভাবে কথা বলছিলুম যে জ্ঞান কাকে বলে সে জিনিসটা আমিই প্রথম আণবিষ্কার করেছি যেন । যেন উপনিষদের ঋষিদের মত বাণী ।” নিবিষ্ট ভাবে শুনে নিয়ে বোধগম্য হল কথাগুলোর অর্থ, মানুষটির আত্মদর্শনের রকমটি তো বেশ নতুন—ভেবেছিল মোহিতা । বেশ সরল গহন অগত্মবিশ্লেষণ । নিশীথের দিকে তাকিয়ে মোহিতা বললে, “উপনিষদের ঋষিদের বেশ আত্মস্থতা ছিল ।” ছিল, নিশীথ বললে, বলে মুখ তুলে মোহিতার দিকে তাকিয়ে দেখল সে নিশীথের দিকে তাকিয়ে অাছে, ‘আজিকালকণর দিনে সে রকম আত্মস্থতা ফিরে পাওয়া কঠিন । ‘কেন ? কিসের জন্যে এ রকম হল ?" ‘দু-একজনের মধ্যে অবিশ্ব্যি বেশ একটা মনের প্রশান্তি আছে আজকালও, কিছুতেই তাদের অস্তিম মনের সুছন্দ নষ্ট হয়ে যায় না, নিজের ও চারদিককার জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য অনেক পরিমাণে ধ্বংস হয়ে গেলেও, মোহিতার মুখের উপর চোখ বুলিয়ে একবার-আধবার চোখে চোখ রেখে বললে নিশীথ, ‘প্রফেসর ঘোষ এই রকম একজন মানুষ । ‘প্রফেসর ঘোষ এই রকম মানুষ ? সচকিত হয়ে নিশীথের দিকে তাকাল মোহিতা । மு ‘হ্যা, আমার তাই মনে হয় । ‘অনেক দিনের চেনা পরিচয় আপনার সঙ্গে প্রফেসরের ?? ‘না । মাঝে-মাঝে এসেছি আমি তার কাছে দু-বছর চার-বছর অন্তর । তিনি হয় তো প্রথম নজরেই আগমণকে চিনতে পারবেন না । প্রতিবারই জিজ্ঞেস করেন কে অণপনি ? তারপর হেসে বললে, ‘মানুষের মুখ মনে রাখার কথা তার নয় । তার কাজ হচ্ছে অতীতে কী বিদ্যা ছিল, অ’ জকাল, ভবিষ্যতকে সে সম্বন্ধে সজাগ করে রাখা । আমাদের মুখ মনে রেখে ও-রকম কোনো সিদ্ধান্তে পৌছনো যায় না । কিন্তু তবুও লোকজনের মুখ বারবার দেখলে ভোলা কঠিন, কিন্তু প্রফেসরের পক্ষে মনে রাখা কঠিন - মনের কোনো দোষ নেই। এটা গুণ । প্রফেসর ૨89