পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহিতা আগে একটু উত্তেজিত হয়েছিল, এইবারে ঠাণ্ড স্থিরতায় ফিরে এসেছে ; অস্তে-অস্তে বললে, উনি কোঁটো খুলে ক্যাকটিন পিল খাচ্ছেন, আমি দেখলুম। হার্টে অসুখ নিশীথবাবুর । এই বয়েসে এই শরীর নিয়ে এম-এ পরীক্ষা দিয়ে ফাস্ট ক্লাশ পেলে তবে তোমরা ওঁর সম্বন্ধে চিন্তা করবার সুযোগ পাবে ? তোমরা এক-একটা বড়-বড় প্রতিষ্ঠান অধিকার করে আছ বলেই এত অবাস্তব হয়ে পড়েছ ? প্রফেসর মোহিতার কথা শুনছেন বলে মনে হল না । ‘আজকাল ইংরেজির দাম কমে যাচ্ছে, প্রফেসর বললেন, ‘কয়েক বছরের মধ্যেই ইংরেজির বিশেষ কোনো দরকার থাকবে না । বাংল! তো রাষ্ট্রভাষা হল পশ্চিমবাংলায়, নিশীথবাবু যদি সাহিত্যের টিচার থাকতে চান তা হলে বাংলায় এম-এ দিয়ে ফাস্ট ক্লাশ পেলে সুবিধে হবে তার । নিশীথ খুব একটা তামাসা বোধ করে বলে, ‘আমার নিজের জন্য আপনার কাছে আসি নি প্রফেসর ঘোষ । এসেছিলুম আর-এক জনের জন্য । আমাদের কলেজের নয়ন দত্ত ইংরেজিতে ফাস্টfক্লাস । কলকাতার কোনো কলেজে কাজ চাচ্ছে সে ; আপনি তাকে ঢুকিয়ে দিলে বডড উপকার হয় । প্রফেসর মোহিতার দিকে তাকালেন ; মোহিতার মুখে থমথমে প্যাচ কষার বা লেগ পুলিঙের কোনো আভাস দেখতে পেলেন না ; নিশীথের দিকে তাকাতে গেলেন না তিনি। একটু তাল কেটে গেছে যেন ; প্রফেসর একটা হাই তুলে বললেন, ‘ফাস্ট'ক্লাস, কী পজিশন' ?

  • সেকেণ্ড" ‘ফাস্ট'ক্লাস ফাস্ট হলেই তো ভাল হত নয়ন দত্তের, মোহিতা একটু সুড়সুড়ি দিয়ে যেন বললে । ‘ওদের বারে যে ফাস্ট হয়েছিল সে সুসাইড করেছে, নিশীথ অঙ্গক্ষেপ

করে । ‘কেন, সে ট্রাভেলিং ফেলোশিপ পায় নি বলে ?” কে যেন বললে । 'না ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয়েছিল সেই উত্তেজনায় । মোহিত বললে, ‘যে ফাস্ট হয়েছিল সে এখন নেই আর । নয়ন দত্ত তা হলে সত্যিই ফাস্ট এখন । ইংরেজিতে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট নয়ন দত্ত । ওকে চোখ বুজে চাকরি দিতে পার তুমি । নিশীথবাবুকে কথা দাও তা হলে । S○O