“কিন্তু সময় লাগবে, আমরা বেঁচে থাকতে কিছু দেখে যেতে পারব না।’ 'আপনি তো বলছেন এক হাজার বছরও লেগে যেতে পারে মানুষের ভাল হতে—' "এক হাজার—তু হাজার—মিশরের ফারাওদের সময় যে-লোকগুলো কষ্ট পাচ্ছিল তারা আজকের উনিশশ আটচল্লিশের পৃথিবীটাকে দেখবার সুযোগ পেলে ভগবত না কি ! হাজার-হাজার বছর পরেও এ রকম । কী হবে তবে মানুষের, কবে হবে ? ‘কবে হবে তা হলে ?’ বলবণর ইচ্ছে ছিল, কথা বলবণর ইচ্ছে ছিল অণরে! ঢের, কিন্তু নিশীথকে উঠে দগড়ণতে দেখে অগত্য উঠে দাড়িয়ে মোহিত বলল, হবে-হবে, অপজই হবে এই কথাই ভাবে মানুষ, এই কথা ভেবেই জোর পেয়ে কাজ করে । প্রফেসর ঘোষের বাড়ির থেকে নিশীথ যখন বেরিয়েছে তখন প্রণয় একটা বাজে । কলকাতায় অনেকগুলো ভাল-ভাল বড়-বড় কলেজ । ইচ্ছে করলে ঘোষ তাকে কোনো একটা ভাল কলেজে ঢুকিয়ে দিতে পারত, খুব বেশি বেগ পেতে হত না ঘোষের । পুরনো সহপাঠী হিসেবে নয়, কোনো বিশেষ পক্ষপাতির আশা করে নয়, এমনিই নিশীথের নিজের কলেজি অভিজ্ঞতা ও কৃতিত্বের গুণে প্রফেসর অভয়েন্দ্র মোহন ঘোষের দক্ষিণমুখ নিশীথের দিকে ফেরানো হোক এটা আশা করেছিল নিশীথ । খুব বড় ফাস্ট ক্লাস বা বিলেতি ডিগ্রি না থাকলে শু পড়বার গুণপনায় কলকাতার কোনো কলেজে ভাল কাজে ঢোকা কঠিন—অসম্ভব—প্রফেসর ঘোষের মতন মুরুব্বি ছাড়া । কিন্তু প্রফেসর কিছু করবেন না। আর কোনো দিকপাল সহপাঠী নেই নিশীথের কলেজ ইউনিভার্সিটি লাইনে । মামা নেই, শ্বশুর নেই—কোনো মুরব্বি নেই এ দিকে ; কলেজে ঢোকা কঠিন, অসম্ভব । ভবানীপুরের দিকে একটা বাস যাচ্ছিল, চড়ে কুলদাপ্রসাদের বাড়ির কাছে গিয়ে নামল নিশীথ । ঢুকে গেল বাড়ির ভিতরে ; কুলদাকে ডেকে পাঠাল । ‘কে তুমি, নিশীথ নাকি ? কলকাতায় এলে কবে ? একটা আধময়লা সোফায় আঁট হয়ে বসে কুলদা বললে । ‘এই তো কয়েক দিন ।’ ‘কোথায় আগছ আজিকাল ? কোন কলেঞ্জে ?? २७७