পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিশীথ । ঘরটা খোলাই ছিল, সব দরজাগুলোই খোলা । খোলা সব জানালা, জিতেনের চোরের ভয় নেই—নমিতারও না । জানে না কি কলকাতার জানালা-ভাঙা চোরেরা, যে এখানে শিক ভাঙতে হবে না, কপাট ছুটিয়ে দিতে হবে না, দেয়ালের পাইপ বেয়ে উঠলেই আগর-কোনো সমস্যা থাকে না । মাল নিয়ে সারণরণত চালানির কণরবণর চলতে পারে ? হগওয়া খেলছে ঘরে, ফ্যানও ঘুরছে । নিশীথ একেবারে ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ল । গরমের রাতে দরকার বুঝে ব্যবস্থা করেছে তারা । নমি তা অবিশ্ব্যি অগমেরিকান স্ল্যাকসটা পরতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ঘুমে বেহু’শ হয়ে পড়েছে । জিতেন ঝগড়াঝাপটা, শুধু চশমাটা খুলতে ভুলে গেছে । কয়েকট । মদের বোতল অণর ডিকশন্টার রয়েছে ঘরের একটা ঠাণ্ড কেগণে । জিতেন খায় না এ সব । নমিতাও না । হয় তো নমিতার কোনো-কোনো বন্ধুদের জন্য রাখতে হয়, কিংবা মার্টিন সাহেব এসে খেয়ে যায় । কিংবা মুখুজে সাহেব । নিশীথ এগিয়ে দেখল দশমি হুইস্কি, ব্রানডি, শ্বাস্পেনের বোতল সব, নামঙ্গদ, বিলিতি ফরাসি জিনিস । কার্লসবাডের জলও রয়েছে ওখানে, সোয়ণপ্লেরও ; অণজকাল অবিশ্যি এ সব নামের নেশ নষ্ট হয়ে গেছে । সে সব আগগের জিনিস নেই এখন আর । তবুও দুটো জলের বোতল আর একটা গ্লাস নীচে নিয়ে যাবে ভাবছিল নিশীথ । এত সমৃদ্ধি থাকতে ডি তেন’দাশগুপ্ত আলু ভজন খেয়ে মরে । দেখ, কেমন ই করে পড়ে আছে লম্বা খুরকিস। মাছের মত । নাকে চশমা অঁটা, বাকি সমস্তট!—মন নয়, শরীরবৃত্তিও নয় ; অচেতন ওষধির মত যেন— রাতের বাতাসে স্নিগ্ধ হচ্ছে । নিশীথ দুটো জলের বোতল তুলে নিল । মদের বোতলগুলোর পাশে, এক গোছা চাবি চকচক করছিল । ঘরের সব দেরাজ বাকস অালমারির চাবি হয় তো এই গোছার ভিতর রয়েছে । অথচ এ-রকম হ্যাচক পড়ে আছে। চাবি হাতে তুলে বোতল দুটো রেখে দিল নিশীথ । কয়েকটা দেরাজ খোলবণর পর মনিব্যাগ পাওয়া গেল । তিন-চারটে ওয়ালেট, একশ টাকার সিলমারা নোট সব প্রতিটি ব্যাগেই । দু-একটা টাকা তুলে নেবে সে ? টাকার খুব দরকার নিশীথের । কলেজের কাজ ছেড়ে দিতে হবে । কলকাতার বাড়ি ভগড়া করে পরিবণর অণনা দরকার । এই লেকপ্রদেশের ১৬