পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলেজে। কলেজের নতুন ঘরদেণর তৈরি করছে রাজমিস্ত্রিরা, দেখে এলুম তো’— এই-ই বুঝি দেখছে পাকিস্তানের ছেলেরা আর প্রফেসররা, জয়নাথবাবু চুরুটে ধীরে-ধীরে দুটো নিট নিঃঝুম টান মেরে বললে, 'নাঃ, বেশি কী আর ছেলে এসেছে পাকিস্তান থেকে আগমণদের কলেজে ; যত রব রটে তার অণশ বাতাসে কিছু এসেছে । না, সে সব কিছু না ।” ‘কত এল ?’ ‘বেশি হলে হাজার দুই-আড়াই । তাতে কি অণর মাল হয় ?” ‘কত ছেলে আগছে কলেজে ? ‘কী হবে তা জেনে ? ভাইস চ্যান্সেলারকে গিয়ে বলবেন যে পাকিস্তান থেকে চলে এসেছি, সঙ্গে দু হাজার ছেলে বেঁটিয়ে এনে জয়নাথের কলেজে ঢুকিয়েছি ; ওকে কাজ দিতে বলুন, এই তো বলবেন ? নিশীথ পকেট থেকে নস্ক্যির কোঁটোটা বার করে এক টিপ নস্যি নেবার জোগাড়ে ছিল। জয়নাথ নিশীথের মুখের দিকে তাকিয়ে এক বার নিজের চুরুটের দিকে তাকাল, এ চুরুটটারও বারটা বাজাচ্ছে প্রায় । 'না, ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে আমি যাব না।’ হয়ে এসেছেন তো তার কাছ থেকে 1’ ‘না । আমি যাই নি ।” জয়নাথের সন্দেহ হচ্ছিল । অবিশ্বি ভাইস চ্যান্সেলার কিংবা অন্য বড়-বড় লোক—এমন কি অ্যাসেম্বলির—এমন কি মিনিস্ট্রির—জয়নাথের কলেজের ভেতরের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে আসবেন না। দূর থেকে সামান্য একটু চাপ দিতে পারেন হয় তো । দূর থেকে । সে চাপের কোনো অর্থ হয় না । জয়নাথের কলেজ তার নিজের কলেজ । অণর-এক রকম চাপ অণছে বটে । দুয়ারে মোটর দাড় করিয়ে, বাড়িতে পায়ের ধুলো দিয়ে, ওপরওয়ালারা যা ছিনিয়ে নেন । কিন্তু সে প্যাচ নিশীথের হয়ে কষতে আসবে বুঝি কেউ ? ও জানে কি কলকাতার ! পোছে কে ওকে ? ও তো মফস্বলে কুড়ি-চব্বিশ বছর পড়েছিল । নিশীথ আড়াই চাল মারবে ভেবেছে জয়নাথকে গয়ানাথের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ! খাজা । চারপেয়ে খাজা । মফস্বলেরই । নিশীথের ঠাকুর্দার বাড়ি দুটো বছর খেয়েছে-পরেছে বটে জয়নাথের বাবা গয়ানাথ মজুমদার আর তার পরিবার, তাদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল যখন । সেটা శిఏ8