পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যথিত পৃথিবীটাকেও, আশ্বস্ত করে শান্ত স্নিগ্ধ গলায় সুলেখাকে বললে । হাসি পেল সুলেখার । সুলেখার ব্যথা কমে গেছে, বলছে কী হরীত ? হারাতের কণ্ঠস্বরের ও মনের বড় বিচ্ছিন্ন ব্যাসভূমিটাকে উপলব্ধি করে সুলেখার আঙুলের প্রতীকভূমিতে কথাটা লেগে আছে যেন, রক্তমাংসের আঙলে ব্যথাটা কমে বাড়ে বটে। "চলো, ঘাসের ওপর গিয়ে বসি । ‘কোথায় ? ঐ সব থোকা-থোকা রাধাফুলের পাশে ? ‘কোথায় গিয়েছে জুলেখা ? হ্যা, ক্যানাফুলের ঝাড়ের কাছে বাগানের ঘাসে । চলো ।” চারদিকে একবার চোখ ঘুরিয়ে ভাল করে তাকিয়ে দেখে সুলেখা বললে, ‘সকলের চোখ পড়বে ওখানে বসলে । ওটা তো একেবারে খোলা জায়গা । লালপুরের পথ এ দিকে । পুবে সদর রাস্তা । চারদিকে নানা ধাচের লোকের ঘরবাড়ি । দিন-কণল বড় খারাপ হরীত । ‘তা তো জানি, হরীত বললে, “মানুষ চাইলে কী হবে, মানুষই তাকে কিছু করতে দিচ্ছে না ।” ‘কোথায় বসবে তা হলে, বারীন্দণয় ?” "চলো, ভিতরে যাই, ভেতরে ঢুকতে-চুকতে সুলেখা বললে, ‘তুমি কি এখানেই থাকবে, জলপাইহাটিতেই থাকবে হরীত ? “আণমার আণসল কাজ তো কলকাতায়—’ "ছোট কাজগুলো হয়ে গেছে ? ‘না, শুরুও তো হল না ।” ‘সেগুলো শেষ করে কলকাতায় যাবে তো ?’ "তাই তো হচ্ছে—' এই দিকে এসো—

ঐদিকে ? দোতলায় যাবে ?
হ্যা, চলো, দোতলার চিলেকোঠায় বসি গে। ‘জুলেখাকে দেখেছিলাম দোতলায় যেতে ? দেখেছিলে তুমি ? সিড়ি ভেঙে ওপরে উঠতে-উঠতে হরীত বললে । 'না, দিদি অবনী খাস্তগিরের বাড়িতে গেছে’—

ლONo