পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নেন রোজই প্রায় সুলেখাদের । একেবারে লাগাও বাড়ি ব্রজমাধববাবুদের । ডাক দিলেই শোনা যায়। এ বাড়ির খবরদারি করেন নবকৃষ্ণবাবুও, তার চেয়েও বেশি ওয়াজেদ আলি সাহেব । কাজেই নরেনরা বিশেষ ভরসা পাচ্ছে না | ‘চিনি নরেন মিত্তিরকে আমি । দিদিকে চিঠি লিখেছিল।’ শুনে একটু অবাক হয়ে হরীত বললে, কবে ? ‘এই তো কয়েক দিন হল—” ‘কী লিখেছিল ?’ ‘আমি দেখি নি। ছি*ড়ে ফেলেছে চিঠি দিদি ।” ‘কণকে দিয়ে পাঠাল চিঠি ? ‘পোস্টে পাঠিয়েছে।’ “এইবারে লোক মারফৎ পাঠাবে, হরীত জানালার ভেতর দিয়ে তাকিয়ে বললে, “হয় তো নিজেই ঢুকে পড়বে। একটু দেখেশুনে চলতে বলে। জুলেখাকে । অবনী খাস্তগিরের সঙ্গে দেখা করতে গেল ? ‘তোমাকে বসিয়ে গেছে, হরীত। ও না এলে তুমি উঠবে না কিন্তু । কেন গেছে অবনীবাবুর কাছে কী করে বলব আমি । দিদির ঢের সদগরি আছে, কলকাতা থেকে নেতা এসেছে, ব্যস হয়ে গেল । নেতা কী না জেনে নাও আগে, কী বলে বুঝে দেখো, কী করে চেয়ে দেখো ; নাকি নেতা এলেই নোলা সকসক করতে থাকবে ? ‘নেতাদের দিন শেষ হয়ে গেছে । নেতারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে । কোথায় এখন আর নেতা, হরীত একটা নিশ্বাস ফেলে বললে, 'জুলেখা তো নেতা হয়েছিল বিয়াল্লিশে । ‘আমিও হয়েছিলুম, হরীত একটু আত্মধিক্কার দিয়ে হেসে বললে, ওটাকেই একটা বড় রুশ রেভলুশনের মত দাড় করানো উচিত ছিল, শুধু ইংরেজ তাড়াবার জন্যেই নয়, আমাদের দেশে যারা ইংরেজের চেয়েও অধিক তাদের নিঃশেষ করে ফেলবণর জন্যে । ইংরেজ গেছে, তারা আছে ; তারা তো জর্গকিয়ে বসেছে ! কেবলই সন্দেহ চারদিকে, কেবলই বিদ্বেষ, কেবলই তিক্ততা ; যেটুকু সুবাতাস ছিল একেবারে কাল হয়ে উঠল তো স্বায়ত্তশাসন আসতে না-আসতেই—কী হল কয়েকটা সরকারি ঘরবাড়ি পুড়িয়ে, ○Oぬ