পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যেতে পারে। কিন্তু তবুও সে শখ মেটানো খুব কঠিন কিন্তু তবুও কেমন দেখাচ্ছে তার মুখ হারাতের চোখের মণির ভেতরে—ঘোষেদের কথা বলতে কী বলছে ভুলে গিয়ে আবার কথার খেইটা মনে পড়ল তার। এরা তো গান্ধীজির উত্তরমীমাংসার দেশের ; পূর্বমীমাংসার কথা বলছ তো তুমি । তুমি বলছ লালমোহন ঘোষ, রাসবিহারী ঘোষের কথা, দণত বের করে হেসে বললে হরীত । সোজা হাসি । কিন্তু হগরীতের খাড়া নগকের ওপর একটা বঁকা ভঁাজ এসে পড়ল। দেখল সুলেখা । ‘কে ঘোষ ব্রাদার্স তবে হগরীত ? বাইরের প্রজ্জ্বলন্ত ক্যানাফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে হরীত একটু চুপ থেকে বললে, “নাঃ, অরবিন্দ, বারীনের সে সব জিনিস ওদের সময়ে হয়ে গেছে । এখন অন্য জিনিস হবে ।” বাতাসে চুল উড়ছিল সুলেখার, খোপা বঁধে নি ; স্নান করা ঠাণ্ড জলদেবীদের মাথার অফুরন্ত কাল সোনালি সাপ যেন তার মাথার চুল সব । পৃথিবীর বাতাসে রোদে এখন ক্রমেই স্থলদেবীর চুলের মতন দেখাচ্ছে । গোছার চুল গালের দিকে টেনে এনে মুখের ওপর বুকের ওপর দিয়ে কাল চুলের অমৃতের দিকে তাকিয়ে সলেখা বললে, ‘ও-সব কোনো জিনিস হবে না আমাদের দেশে । এটা আমাদের ভারতবর্ষ, এর প্রাণ অণলগদা । এখানে রোবম্পিয়েরের ছাদে লেনিন, স্তালিন, বুখারিনের জিনিস চলবে না । স্বায়ত্তশাসন পেয়েছি ; অনেক কাজ এখন দেশের মানুষের হাতে। কোনো একটা গড়বার কাজ হাতে নিতে হবে তোমায় হ রীত। কোম্পানি বাগানের মাস্টারদার, অনন্ত সিংদের, উনিশশ বেয়াল্লিশের ভাঙনের দিন নেই এখন অfর, সত্যিই নেই । কংগ্রেস চারদিক থেকে গঠন করবার, নির্মাণ করবার জন্যে, শীতের শেষে কুমোর পোকার মত কেমন বু* বু করছে শুনছ না ? ‘হাসছ কেন সুলেখা ? ‘হাসছি, তুমি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসছ কেন হারত ? ‘শীতের শেষে কুমোর পোকার মত বুর্জ বু করছে ? হাসতে-হাসতে চোখ ঠিকরে ঠিকরে উঠছিল হারাতের, ভারী মজার কথাই বলেছে সুলেখা ; শীতের শেষে কুমোর’— বড় বিপদেই পড়েছে কংগ্রেস', সুলেখা বললে, ‘এমনি তো ভালই হচ্ছিল সব, Wー)〉8